রহস্যময় স্বামী নামক এক অজানা চরিত্র! পার্ট ১
#স্বামী
-বারবার ব্যাথায় কুকিয়ে ওঠছে অনু।ধবধবে সাদা বিছানার চাদরে ছোপ ছোপ রক্ত লেগে গেছে। কিন্তু তাতে বিন্দু মাত্র ভুরুক্ষেপ দেখাচ্ছে না নির্ঝর।সে তার নিজের কাজে ব্যাস্ত।
নির্ঝরের প্রত্যেকটা স্পর্শে কেবল রাগ আর ক্ষোভ মিশে রয়েছে।একটুও ভালোবাসা নেই।
অসহ্য যন্ত্রনা মুখ বুজে সহ্য করছে অনু।
অনুর চোখ দিয়ে টুপটুপ করে পানি পড়ছে।আজই নির্ঝরের সাথে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়েছে অনুর।
অনুর বাবা মা বেশ বেছে বেছে একমাত্র মেয়ের জন্য পছন্দ করেছে নির্ঝরকে।তারপর ধুমধাম করে বিয়েটা সম্পূর্ন হয়েছে।
বিয়ের প্রথম রাতেই স্বামীর এমন ভয়ংকর রূপ কিছুতেই মানতে পারছে না অনু।বড্ড কষ্ট হচ্ছে।বড্ড বেশি
রাতের প্রায় শেষের দিকে নির্ঝর ক্লান্ত হয়ে অনুকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়েছে।
কিন্তু অনুর চোখে ঘুম নেই।স্মৃতির আঙ্গিনায় বার বার উকি মারছে কেউ একজন।
নিজেকে নির্ঝরের বাহুবন্ধন থেকে মুক্ত করে কোনো রকমে একটা ওড়না পেচিয়ে বাথরুমে চলে যায় অনু।
শাওয়ারটা ছেড়ে দিয়ে ইচ্ছে মতো কান্না করতে থাকে।
যদি না সায়ন অনুকে এভাবে একা ফেলে চলে যেত তাহলে নির্ঝর নামের এই মানুষটা কখনোই তার জীবনে আসতো না। আর না কখনো এভাবে নিজের স্বামীর কাছে....।
কথাগুলো ভাবতেই অনুর দুচোখ ভিজে ওঠে।।।
অনু কোনো রকমে সাওয়ারটা শেষ করে ওযু করে বেরিয়ে আসে।
বিছানার দিকে চোখ পড়তেই দেখে নির্ঝর গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন।
গায়ে কাথাটা টেনে দিয়ে জায়নামাজ আর কোরআন শরীফটা বুকে নিয়ে ঘরের এককোনে চলে যায়।প্রথমে কয়েকপাতা কোরআন পড়তেই বাহিরে আজানের ধব্বনি কানে আসে।তারপর নামাজ
অনু নামাজ শেষ করে পাশ ফিরতেই চোখ যায় তার ঠিক পাশেই সাদা ধবধবে পান্জাবী পরে নামাজে বসেছেন তার স্বামী নির্ঝর।
এতোক্ষন নামাজে এতো মগ্ন ছিলো যে পাশে কেউ আছে সেদিকে খেয়ালই ছিলো না।
নামাজ শেষ করে অনু ওঠে দাড়াতেই নির্ঝরও ওঠে দাড়ায়।
তারপর অনুকে একটানে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়। কাছে টেনে এনে কপাঁলে একটা চুমু এঁকে দেয়।
তারপর ধপ করে ছোফায় গিয়ে শুয়ে পড়ে।
ঘটনাটা আকষ্মিকভাবে ঘটায় সবই অনুর মাথায় উপর দিয়ে যায়।
:::কই এই ছোয়াই তো কোনো ঘেন্না নেই যা আছে তা হলো ভালোবাসা।
তহলে রাতের ছোয়াই কি ছিলো??
অনু অবাক হয়ে অপলক তাকিয়ে আছে নির্ঝরের দিকে।সে সোফায় একটা বালিস জড়িয়ে চোখ বন্ধ করে আছে।
কি নিষ্পাপ মুখটা।বিয়ে থেকে শুরু করে এতোটা সময় নির্ঝরের সাথে থাকলেও লোকটাকে ভালো করে দেখা হয়নি অনুর।
"আসলে হৃদয়ের মাঝে কেউ লুকিয়ে থাকলে কি আর কারো দিকে চোখ যায়"
হটাৎই অনুর চোখ যায় বিছানার দিকে।বিছানার বেশ কিছু জায়গায় রক্তের দাগ স্পষ্ট
অনুর চোখ আবার জলে ভিজে যায়......
এরকম একটা লোকের সাথেই তাকে কাটাতে হবে জীবনের বাকি রাতগুলো।
-শাড়ির আঁচলটা ঠিক করো। এভাবে শরীর দেখিয়ে আর যার মন পাও না কেন আমার মন পাবে না।
কথাটা বলেই ঘরের দিকে পা বাড়ায় নির্ঝর।
সেই ভোর রাত থেকেই অনু বারান্দায় দাড়িয়ে আছে।ভোরের আকাশ অনেকদিন দেখা হয় না।
সকালের রক্তিম সূর্য আর কিচির মিচির পাখির গান।হালকা বাতাস।
অনেক দিন পর এভাবে খোলা আকাশ দেখতে বড্ড ভালো লাগছিলো অনুর।সারা রাতে হৃদয়ে যে ঝড় শুরু হয়েছিলো তার অনেকটাই শান্ত হয়ে গিয়েছে।
মৃদু বাতাসে শাড়ির আঁচলটা বুক থেকে একটু সরে গিয়ে পেটের কিছু অংশ দেখা যাচ্ছিলো ব্যাস তা দেখেই নির্ঝরের এমন মন্তব্য।
:::ভুল করেই তো সরে গেছে ইচ্ছে করে তো আর দেখিয়ে বেরাচ্ছি না আমি কি তেমন মেয়ে নাকি??স্বামীই তো পর পুরুষ তো আর নয় এমন করে বলার কি আছে.....
কি নোংরা মানুষ আর কি নোংরা চিন্তা ভাবনা তার ছি!!
কথাগুলো নিজে নিজেই বলছিলো অনু।
হটাৎই দরজার খটখট শব্দে অনু ছুট লাগায় ঘরের দিকে।এতো চিন্তার মাঝে অনু ভুলেই গিয়েছিলো বেশ বেলা হয়ে গেছে।
নির্ঝর ওয়াশরুমে।বোধয় আরেক দফা শাওয়ার নিচ্ছে।বার বার এতো শাওয়ার নেওয়ার কি আছে।
নিক না তাতে আমার কি!ও
অনু দরজা খুলতেই ধরফর করে নীরা ভেতরে ঢুকে পড়ে.......
নীরা হলো নির্ঝরের ছোট বোন...
-কি গো ভাবি এতো বেলা হলো এখনো ঘুম ভাঙ্গছে না বুঝি??
-ঘুমোলে তো ঘুম ভাঙ্গবে ঘুমালাম কখন!!(মনে মনে)
-কিছু বললে??
-কই না তো
-তোমার বর কই??
-শাওয়ারে!!
-ওওও আচ্ছা তো এবার তোমাদের ভালোবাসাবাসির সমাপ্তি ঘটলে নিচে নামো মা তখন থেকে তোমার জন্য অপেক্ষা করছে.....
-ভালোবাসা মাই ফুট(মনে মনে)
-কিছু বললে?
-না তো
-ওও তুমি খুব মিষ্টি তাই তো আমার ভাই সেই তুমি তুমি করে একেবারে......
-কি??
-ইয়ে মানে কিছু না।আসছি আমি তোমরা তারাতারি নিচে এসো!!!
অনু ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে সেখানেই দাড়িয়ে আছে.....
কি বলে গেল??
অনু পেছন ফিরে তাকাতেই দেখে নির্ঝর দাড়িয়ে আছে।
চোখ দুটো লাল টুকটুকে হয়ে আছে।বোধয় এক্ষুনি টুপ করে রক্ত চলে আসবে।নাকের মাথাটাও লাল হয়ে আছে।নাকটা ফুলে আছে....
নির্ঝর এক দৃষ্টিতে অনুর দিকে তাকিয়ে আছে।অনুর দিকে নয় অনুর গলায় পড়ে থাকা চেইনটার দিকে।
অনুর কেমন ভয় ভয় করছে।।।
-কিছু বলবেন??
-(..)
-এভাবে কি দেখছেন??
অনু একটু পেছাতেই নির্ঝর অনুর হাত ধরে একটানে বুকের সাথে মিশিয়ে নেয়
তারপর অনুর ঠোটে ঠোট মিলিয়ে দেয়।অনু বার বার ছোটার চেষ্টা করছে।কিন্তু পারছে না কিছুক্ষন পর নির্ঝর নিজেই অনুকে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দেয়। অনু হটাৎ ধাক্কায় টাল সমলাতে না পেড়ে দুম করে গিয়ে খাটের কোনে বারি খায়।কপালে একটু লাগলেও কাটে নি।
তবে ব্যাথ্যা করছে।
এতোক্ষনে নির্ঝর ঘর থেকে বেরিয়ে গেছে।অনু বরফের মতো সেখানেই জমে গেছে।
কি হচ্ছে তার সাথে এসব??
"আচ্ছা যদি সায়ন আমাকে এভাবে একা ফেলে চলে না যেতো যদি বিয়েটা সায়নের সাথে হতো তখনই কি এরকম কিছু ঘটতো"
"হয়তো না.....!!!
তবে সে তো চলে গেছে।চলে যাবে কেন পালিয়ে গেছে।
এসবের মাঝে আমাকে একা ফেলে পালিয়ে গেছে...না কি কেউ তাকে দূরে সড়িয়ে দিয়েছে"
কিছুক্ষন চুপচাপ কান্না করার পর নিজেকে গুছিয়ে নিয়ে নিচে নামে।
এখন সব কিছুই মেনে নিতে হবে।স্বামী বলে কথা!!
নিচে অনুর শ্বাশুড়ি ননদ শ্বশুড় সবাই টেবিলে বসে আছে করছে...
বাড়ির সবাই খুব ভালো।তাদের কাছে অনু যেন এক মহামূল্যবান জিনিস।তাতে একটু আঁচরও যদি লাগে তাতে বোধয় মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে......
তবে অনু শ্বাশুড়ি একদম চুপ চাপ।কোনো কথা বলছে না।
অনুর দিকে একবার ফিরেও তাকাচ্ছে না।
নির্ঝরের সাথে গোটা বিয়েতে অনু তার শ্বাশুড়িকে একবার ও দেখে নি।বোধয় তিনি এই অনুষ্ঠানে নিজেকে জড়াতেই চান নি।
বিষয়টা অনুর চোখে বড্ড লাগছে কিন্তু মনে দাগ কাটছে না।
"নতুন বউ বলে কথা"
আর ভালোই তো লাগছে এতো আদর যত্ন মন্দ লাগার প্রশ্নয় ওঠে না"
তবে অনুর ধারণা মতে শ্বাশুড়িরা এমনই হয়।
তবে সায়নের মা ভদ্র মহিলা ছিলো একদম এরকম বড্ড রাগী।তবে অনুকে তার ভারী পচ্ছন্দ ছিলো।।।
আজ অনুর বউ ভাত।
অনুর মা বাবা ভাই ভাবি সবাই এসেছে....
অনু এতো লোকের মাঝে মাকে টেনে নিয়ে আড়ালে চলে যায়
এতোটা সময় বোধয় সে মায়েরই অপেক্ষায় ছিলো!!
মাকে জড়িয়ে ইচ্ছে মতো কেঁদে দেয়
-অনু
-মা আমাকে নিয়ে চলো আমি থাকবো না এখানে
-কেন রে বাবুই কি হয়েছে??
-আমি সায়নের কাছে যাবো।সায়ন কোথায়??
-অনু!! (ধমকিয়ে)
-বলো না মা আমার সান কোথায়??
-অনু.....
-মা প্লিজ এই লোকটার সাথে থাকা আমার পক্ষে অসম্ভব!!এই লোকটা খুব বাজে....
অনুকে কথার মাঝখানে থামিয়ে দিয়ে।
একটু মন দিয়ে পড়ুন--
পরবর্তী অংশ অর্থাৎ সবগুলো পর্ব এই I'd তে দেয়া হবে, পুরো গল্পটি পড়তে রিকুয়েস্ট দিয়ে সাথেই থাকুন। ভালো ভালো গল্প পেতে এই আইডির সাথেই থাকুন!অনেক সময় গ্রুপে গল্প পোস্ট হয় না। তাই গ্রুপে গল্প পেতে সমস্যা হলে ফলো অথবা রিকুয়েস্ট দিয়ে রাখতে পারেন ধন্যবাদ।
-অনু নির্ঝর খুব ভালো ছেলে একটু মানিয়ে নাও...ও তোমাকে সুখে রাখবে।
(অনুর মা কথাগুলো বলে মাথা নিচু করে ফেলে....)
-সায়নকে ছাড়া আমি সুখে থাকতে পারবো না মা।
মা প্লিজ বলো না সায়ন কোথায়।আমি সায়নের কাছে চলে যাবো......
মেয়ের ছলছল চোখের দিকে তাকিয়ে অনুর মা অনামিকা আড়া মুখ খোলে
-অনু আসলে সায়ান....
কোথা থেকে দুম করে নির্ঝর চলে আসে।অনুর মাকে ইশাড়ায় চুপ করিয়ে দেয়।
-অ্যান্টি বাহিরে খেতে দিয়েছে আপনি খাবেন না চলুন!!
-হুম্ম বাবা চলো।।
অনুর মা যাওয়ার আগে ছলছল চোখে একবার নির্ঝরের দিকে তাকিয়ে চোখ নামিয়ে নেয়।
অনুর মা চলে যায়।অনু মায়ের পেছন পেছন যেতে লাগলে নির্ঝর অনুর হাত ধরে টেন মারে
অনুও হুমড়ি খেয়ে পড়ে নির্ঝরের বুকে।
-কি হলো হাত ধরেছেন কেন ছাড়ুন!!
-(...)
-কি অসভ্যতামি হচ্ছে শুনি।
-(...)
-ছাড়ুন অসভ্য লোক একটা....!!
-(...)
নির্ঝর অনুকে শক্ত করে বুকের সাথে চেপে ধরে আছে।
তারপর পকেট থেকে একটা রুমাল বের করে অনুর চোখের নিচে টেপ্টে যাওয়া কাজলটা মুছিয়ে দেয়।।।
কান্না করার ফলে চোখের নিচে কাজলটা টেপ্টে গিয়েছিলো!!
"তোমার চোখে দেখেছিলেম আমি আমার সর্বনাশ"
-কিহ্
-(...)
-কি বললেন??
-জানি না!!
-নিজে বলে এখন বলছেন জানি না।
-হুম্ম সত্যিই জানি না তোমাকে এখন ঠিক কি করা উচিত
-মানে??
-জানি না!!!
সবার আগে আমার গল্প পড়তে চাইলে "নীল ক্যাফের ভালোবাসা" পেজে পাবেন।
কথাটা বলেই নির্ঝর রুমালটা পকেটে রেখে দিয়ে হাটা ধরে।
অনুও নির্ঝরের পেছন পেছন হাটছে।হাটছে না রিতিমতো ছুটছে....
নির্ঝর ইয়া লম্বা মানুষ।তার উচ্চতার কাছে অনু নিছকই বাচ্চা।
"উফ একেবারে হাতি একটা"
অনুর কাছে তার স্বামীকে পৃথিবীর সবচেয়ে রহস্যময় চরিত্র বলে মনে হচ্ছে।
যার হৃদয়ের বেলাভূমিতে কখনো মেঘ তো কখনো বৃষ্টি।
আবার মাঝে মাঝে রোদ্দুরও উকি মারে......!!!
কি চায় এই রহস্যময় মানব!!
না রহস্যময় স্বামী নামক এক অজানা চরিত্র....!!
-বারবার ব্যাথায় কুকিয়ে ওঠছে অনু।ধবধবে সাদা বিছানার চাদরে ছোপ ছোপ রক্ত লেগে গেছে। কিন্তু তাতে বিন্দু মাত্র ভুরুক্ষেপ দেখাচ্ছে না নির্ঝর।সে তার নিজের কাজে ব্যাস্ত।
নির্ঝরের প্রত্যেকটা স্পর্শে কেবল রাগ আর ক্ষোভ মিশে রয়েছে।একটুও ভালোবাসা নেই।
অসহ্য যন্ত্রনা মুখ বুজে সহ্য করছে অনু।
অনুর চোখ দিয়ে টুপটুপ করে পানি পড়ছে।আজই নির্ঝরের সাথে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়েছে অনুর।
অনুর বাবা মা বেশ বেছে বেছে একমাত্র মেয়ের জন্য পছন্দ করেছে নির্ঝরকে।তারপর ধুমধাম করে বিয়েটা সম্পূর্ন হয়েছে।
বিয়ের প্রথম রাতেই স্বামীর এমন ভয়ংকর রূপ কিছুতেই মানতে পারছে না অনু।বড্ড কষ্ট হচ্ছে।বড্ড বেশি
রাতের প্রায় শেষের দিকে নির্ঝর ক্লান্ত হয়ে অনুকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়েছে।
কিন্তু অনুর চোখে ঘুম নেই।স্মৃতির আঙ্গিনায় বার বার উকি মারছে কেউ একজন।
নিজেকে নির্ঝরের বাহুবন্ধন থেকে মুক্ত করে কোনো রকমে একটা ওড়না পেচিয়ে বাথরুমে চলে যায় অনু।
শাওয়ারটা ছেড়ে দিয়ে ইচ্ছে মতো কান্না করতে থাকে।
যদি না সায়ন অনুকে এভাবে একা ফেলে চলে যেত তাহলে নির্ঝর নামের এই মানুষটা কখনোই তার জীবনে আসতো না। আর না কখনো এভাবে নিজের স্বামীর কাছে....।
কথাগুলো ভাবতেই অনুর দুচোখ ভিজে ওঠে।।।
অনু কোনো রকমে সাওয়ারটা শেষ করে ওযু করে বেরিয়ে আসে।
বিছানার দিকে চোখ পড়তেই দেখে নির্ঝর গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন।
গায়ে কাথাটা টেনে দিয়ে জায়নামাজ আর কোরআন শরীফটা বুকে নিয়ে ঘরের এককোনে চলে যায়।প্রথমে কয়েকপাতা কোরআন পড়তেই বাহিরে আজানের ধব্বনি কানে আসে।তারপর নামাজ
অনু নামাজ শেষ করে পাশ ফিরতেই চোখ যায় তার ঠিক পাশেই সাদা ধবধবে পান্জাবী পরে নামাজে বসেছেন তার স্বামী নির্ঝর।
এতোক্ষন নামাজে এতো মগ্ন ছিলো যে পাশে কেউ আছে সেদিকে খেয়ালই ছিলো না।
নামাজ শেষ করে অনু ওঠে দাড়াতেই নির্ঝরও ওঠে দাড়ায়।
তারপর অনুকে একটানে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়। কাছে টেনে এনে কপাঁলে একটা চুমু এঁকে দেয়।
তারপর ধপ করে ছোফায় গিয়ে শুয়ে পড়ে।
ঘটনাটা আকষ্মিকভাবে ঘটায় সবই অনুর মাথায় উপর দিয়ে যায়।
:::কই এই ছোয়াই তো কোনো ঘেন্না নেই যা আছে তা হলো ভালোবাসা।
তহলে রাতের ছোয়াই কি ছিলো??
অনু অবাক হয়ে অপলক তাকিয়ে আছে নির্ঝরের দিকে।সে সোফায় একটা বালিস জড়িয়ে চোখ বন্ধ করে আছে।
কি নিষ্পাপ মুখটা।বিয়ে থেকে শুরু করে এতোটা সময় নির্ঝরের সাথে থাকলেও লোকটাকে ভালো করে দেখা হয়নি অনুর।
"আসলে হৃদয়ের মাঝে কেউ লুকিয়ে থাকলে কি আর কারো দিকে চোখ যায়"
হটাৎই অনুর চোখ যায় বিছানার দিকে।বিছানার বেশ কিছু জায়গায় রক্তের দাগ স্পষ্ট
অনুর চোখ আবার জলে ভিজে যায়......
এরকম একটা লোকের সাথেই তাকে কাটাতে হবে জীবনের বাকি রাতগুলো।
-শাড়ির আঁচলটা ঠিক করো। এভাবে শরীর দেখিয়ে আর যার মন পাও না কেন আমার মন পাবে না।
কথাটা বলেই ঘরের দিকে পা বাড়ায় নির্ঝর।
সেই ভোর রাত থেকেই অনু বারান্দায় দাড়িয়ে আছে।ভোরের আকাশ অনেকদিন দেখা হয় না।
সকালের রক্তিম সূর্য আর কিচির মিচির পাখির গান।হালকা বাতাস।
অনেক দিন পর এভাবে খোলা আকাশ দেখতে বড্ড ভালো লাগছিলো অনুর।সারা রাতে হৃদয়ে যে ঝড় শুরু হয়েছিলো তার অনেকটাই শান্ত হয়ে গিয়েছে।
মৃদু বাতাসে শাড়ির আঁচলটা বুক থেকে একটু সরে গিয়ে পেটের কিছু অংশ দেখা যাচ্ছিলো ব্যাস তা দেখেই নির্ঝরের এমন মন্তব্য।
:::ভুল করেই তো সরে গেছে ইচ্ছে করে তো আর দেখিয়ে বেরাচ্ছি না আমি কি তেমন মেয়ে নাকি??স্বামীই তো পর পুরুষ তো আর নয় এমন করে বলার কি আছে.....
কি নোংরা মানুষ আর কি নোংরা চিন্তা ভাবনা তার ছি!!
কথাগুলো নিজে নিজেই বলছিলো অনু।
হটাৎই দরজার খটখট শব্দে অনু ছুট লাগায় ঘরের দিকে।এতো চিন্তার মাঝে অনু ভুলেই গিয়েছিলো বেশ বেলা হয়ে গেছে।
নির্ঝর ওয়াশরুমে।বোধয় আরেক দফা শাওয়ার নিচ্ছে।বার বার এতো শাওয়ার নেওয়ার কি আছে।
নিক না তাতে আমার কি!ও
অনু দরজা খুলতেই ধরফর করে নীরা ভেতরে ঢুকে পড়ে.......
নীরা হলো নির্ঝরের ছোট বোন...
-কি গো ভাবি এতো বেলা হলো এখনো ঘুম ভাঙ্গছে না বুঝি??
-ঘুমোলে তো ঘুম ভাঙ্গবে ঘুমালাম কখন!!(মনে মনে)
-কিছু বললে??
-কই না তো
-তোমার বর কই??
-শাওয়ারে!!
-ওওও আচ্ছা তো এবার তোমাদের ভালোবাসাবাসির সমাপ্তি ঘটলে নিচে নামো মা তখন থেকে তোমার জন্য অপেক্ষা করছে.....
-ভালোবাসা মাই ফুট(মনে মনে)
-কিছু বললে?
-না তো
-ওও তুমি খুব মিষ্টি তাই তো আমার ভাই সেই তুমি তুমি করে একেবারে......
-কি??
-ইয়ে মানে কিছু না।আসছি আমি তোমরা তারাতারি নিচে এসো!!!
অনু ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে সেখানেই দাড়িয়ে আছে.....
কি বলে গেল??
অনু পেছন ফিরে তাকাতেই দেখে নির্ঝর দাড়িয়ে আছে।
চোখ দুটো লাল টুকটুকে হয়ে আছে।বোধয় এক্ষুনি টুপ করে রক্ত চলে আসবে।নাকের মাথাটাও লাল হয়ে আছে।নাকটা ফুলে আছে....
নির্ঝর এক দৃষ্টিতে অনুর দিকে তাকিয়ে আছে।অনুর দিকে নয় অনুর গলায় পড়ে থাকা চেইনটার দিকে।
অনুর কেমন ভয় ভয় করছে।।।
-কিছু বলবেন??
-(..)
-এভাবে কি দেখছেন??
অনু একটু পেছাতেই নির্ঝর অনুর হাত ধরে একটানে বুকের সাথে মিশিয়ে নেয়
তারপর অনুর ঠোটে ঠোট মিলিয়ে দেয়।অনু বার বার ছোটার চেষ্টা করছে।কিন্তু পারছে না কিছুক্ষন পর নির্ঝর নিজেই অনুকে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দেয়। অনু হটাৎ ধাক্কায় টাল সমলাতে না পেড়ে দুম করে গিয়ে খাটের কোনে বারি খায়।কপালে একটু লাগলেও কাটে নি।
তবে ব্যাথ্যা করছে।
এতোক্ষনে নির্ঝর ঘর থেকে বেরিয়ে গেছে।অনু বরফের মতো সেখানেই জমে গেছে।
কি হচ্ছে তার সাথে এসব??
"আচ্ছা যদি সায়ন আমাকে এভাবে একা ফেলে চলে না যেতো যদি বিয়েটা সায়নের সাথে হতো তখনই কি এরকম কিছু ঘটতো"
"হয়তো না.....!!!
তবে সে তো চলে গেছে।চলে যাবে কেন পালিয়ে গেছে।
এসবের মাঝে আমাকে একা ফেলে পালিয়ে গেছে...না কি কেউ তাকে দূরে সড়িয়ে দিয়েছে"
কিছুক্ষন চুপচাপ কান্না করার পর নিজেকে গুছিয়ে নিয়ে নিচে নামে।
এখন সব কিছুই মেনে নিতে হবে।স্বামী বলে কথা!!
নিচে অনুর শ্বাশুড়ি ননদ শ্বশুড় সবাই টেবিলে বসে আছে করছে...
বাড়ির সবাই খুব ভালো।তাদের কাছে অনু যেন এক মহামূল্যবান জিনিস।তাতে একটু আঁচরও যদি লাগে তাতে বোধয় মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে......
তবে অনু শ্বাশুড়ি একদম চুপ চাপ।কোনো কথা বলছে না।
অনুর দিকে একবার ফিরেও তাকাচ্ছে না।
নির্ঝরের সাথে গোটা বিয়েতে অনু তার শ্বাশুড়িকে একবার ও দেখে নি।বোধয় তিনি এই অনুষ্ঠানে নিজেকে জড়াতেই চান নি।
বিষয়টা অনুর চোখে বড্ড লাগছে কিন্তু মনে দাগ কাটছে না।
"নতুন বউ বলে কথা"
আর ভালোই তো লাগছে এতো আদর যত্ন মন্দ লাগার প্রশ্নয় ওঠে না"
তবে অনুর ধারণা মতে শ্বাশুড়িরা এমনই হয়।
তবে সায়নের মা ভদ্র মহিলা ছিলো একদম এরকম বড্ড রাগী।তবে অনুকে তার ভারী পচ্ছন্দ ছিলো।।।
আজ অনুর বউ ভাত।
অনুর মা বাবা ভাই ভাবি সবাই এসেছে....
অনু এতো লোকের মাঝে মাকে টেনে নিয়ে আড়ালে চলে যায়
এতোটা সময় বোধয় সে মায়েরই অপেক্ষায় ছিলো!!
মাকে জড়িয়ে ইচ্ছে মতো কেঁদে দেয়
-অনু
-মা আমাকে নিয়ে চলো আমি থাকবো না এখানে
-কেন রে বাবুই কি হয়েছে??
-আমি সায়নের কাছে যাবো।সায়ন কোথায়??
-অনু!! (ধমকিয়ে)
-বলো না মা আমার সান কোথায়??
-অনু.....
-মা প্লিজ এই লোকটার সাথে থাকা আমার পক্ষে অসম্ভব!!এই লোকটা খুব বাজে....
অনুকে কথার মাঝখানে থামিয়ে দিয়ে।
একটু মন দিয়ে পড়ুন--
পরবর্তী অংশ অর্থাৎ সবগুলো পর্ব এই I'd তে দেয়া হবে, পুরো গল্পটি পড়তে রিকুয়েস্ট দিয়ে সাথেই থাকুন। ভালো ভালো গল্প পেতে এই আইডির সাথেই থাকুন!অনেক সময় গ্রুপে গল্প পোস্ট হয় না। তাই গ্রুপে গল্প পেতে সমস্যা হলে ফলো অথবা রিকুয়েস্ট দিয়ে রাখতে পারেন ধন্যবাদ।
-অনু নির্ঝর খুব ভালো ছেলে একটু মানিয়ে নাও...ও তোমাকে সুখে রাখবে।
(অনুর মা কথাগুলো বলে মাথা নিচু করে ফেলে....)
-সায়নকে ছাড়া আমি সুখে থাকতে পারবো না মা।
মা প্লিজ বলো না সায়ন কোথায়।আমি সায়নের কাছে চলে যাবো......
মেয়ের ছলছল চোখের দিকে তাকিয়ে অনুর মা অনামিকা আড়া মুখ খোলে
-অনু আসলে সায়ান....
কোথা থেকে দুম করে নির্ঝর চলে আসে।অনুর মাকে ইশাড়ায় চুপ করিয়ে দেয়।
-অ্যান্টি বাহিরে খেতে দিয়েছে আপনি খাবেন না চলুন!!
-হুম্ম বাবা চলো।।
অনুর মা যাওয়ার আগে ছলছল চোখে একবার নির্ঝরের দিকে তাকিয়ে চোখ নামিয়ে নেয়।
অনুর মা চলে যায়।অনু মায়ের পেছন পেছন যেতে লাগলে নির্ঝর অনুর হাত ধরে টেন মারে
অনুও হুমড়ি খেয়ে পড়ে নির্ঝরের বুকে।
-কি হলো হাত ধরেছেন কেন ছাড়ুন!!
-(...)
-কি অসভ্যতামি হচ্ছে শুনি।
-(...)
-ছাড়ুন অসভ্য লোক একটা....!!
-(...)
নির্ঝর অনুকে শক্ত করে বুকের সাথে চেপে ধরে আছে।
তারপর পকেট থেকে একটা রুমাল বের করে অনুর চোখের নিচে টেপ্টে যাওয়া কাজলটা মুছিয়ে দেয়।।।
কান্না করার ফলে চোখের নিচে কাজলটা টেপ্টে গিয়েছিলো!!
"তোমার চোখে দেখেছিলেম আমি আমার সর্বনাশ"
-কিহ্
-(...)
-কি বললেন??
-জানি না!!
-নিজে বলে এখন বলছেন জানি না।
-হুম্ম সত্যিই জানি না তোমাকে এখন ঠিক কি করা উচিত
-মানে??
-জানি না!!!
সবার আগে আমার গল্প পড়তে চাইলে "নীল ক্যাফের ভালোবাসা" পেজে পাবেন।
কথাটা বলেই নির্ঝর রুমালটা পকেটে রেখে দিয়ে হাটা ধরে।
অনুও নির্ঝরের পেছন পেছন হাটছে।হাটছে না রিতিমতো ছুটছে....
নির্ঝর ইয়া লম্বা মানুষ।তার উচ্চতার কাছে অনু নিছকই বাচ্চা।
"উফ একেবারে হাতি একটা"
অনুর কাছে তার স্বামীকে পৃথিবীর সবচেয়ে রহস্যময় চরিত্র বলে মনে হচ্ছে।
যার হৃদয়ের বেলাভূমিতে কখনো মেঘ তো কখনো বৃষ্টি।
আবার মাঝে মাঝে রোদ্দুরও উকি মারে......!!!
কি চায় এই রহস্যময় মানব!!
না রহস্যময় স্বামী নামক এক অজানা চরিত্র....!!
নির্ঝর ধীর পায়ে এগিয়ে আসছে অনুর দিকে।অনুর ভয়ে বুক কাঁপছে....যদি কাল রাতের মতো আবার!!!
"না না অসম্ভব....."
বউ ভাতের অনুষ্ঠান শেষে সবাইকে বিদায় দিয়ে অনু ঘরে চলে আসে।পোশাক পাল্টে....
বেশ আয়েশ করে বিছানায় বসতেই নির্ঝরের আগমন ঘটে।
নির্ঝরকে দেখে বিছানার একপাশে গুটিসুটি মেরে বসে পড়ে অনু।
নির্ঝর ঘরে ঢুকে অনুর দিকে তাকাতেই অনুর কাল রাতের কথা মনে পড়ে যায়।
নির্ঝরকে এগিয়ে আসতে দেখে অনু দুম করে দাড়িয়ে যায়।
একটা ছোট্ট ঢোক গিলে বলতে শুরু করে.....
-দেখুন মি.চৌধুরী আপনার সাথে আমাকে জোড় করে বিয়ে দেওয়া হয়েছে।আমি অন্য কাউকে ভালোবাসতাম। আর এখনো বাসি।কথাগুলো আমি আপনাকে কালই বলতাম কিন্তু আপনি তো আপনার কাজে না না স্বামীগিরি ফলাতে ব্যস্ত ছিলেন তাই বলার সুযোগটাই হয়ে ওঠে নি.....কিন্তু শুনে রাখুন যে দিন সে ফিরে আসবে সেদিন আমি...
বাকি কথা বলার সুযোগ হয়নি অনুর নির্ঝর অনুর চুলে মুঠি ধরে নিজে দিকে টেনে নেয়।তারপর ঠোটে ঠোট মিলিয়ে দেয়।
অনু বার বার হাত পা ছুড়ছে কিন্তু কিছু করার উপায় নেই।দুচোখ
অনু নির্ঝরকে সর্ব শক্তি দিয়ে ধাক্কা দিতেই নির্ঝর পেছনে সরে যায়।
-আপনি কি চান বলুনতো এভাবে বার বার জোড় করছেন কেন।যদি এতোই শরীরের নেশা হয়ে থাকে তাহলে পতিতা পল্লী গেলেই পারতেন। কেন আমার আর সায়নের মাঝে এলেন???
নির্ঝর বাক রুদ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে অনুর দিকে।
"তুমি তার কাছে যেতে চাও যে তোমার সবটা চায় না কিন্তু তার কাছে যেতে চাও না যে তোমার ভালোমন্দ সবটা চায়"
কথাগুলো বলেই নির্ঝর বিছানা থেকে একটা বালিস ঢিল মেরে অনুর দিকে ছুড়ে দেয়।
অনু বালিসটা হাতে নিয়ে বাঁক রুদ্ধ হয়ে দাড়িয়ে আছে।
আর কোনো কথা হয়নি দুজনের মাঝে।
নির্ঝর খাটের উপর উবু হয়ে শুয়ে পড়ে আর অনু এখনো ওভাবেই দাড়িয়ে আছে।
-লাইটটা ওফ করে দাও (অনুর দিকে না তাকিয়ে)
অনু একটা ভেংচি কেটে সোফার দিকে পা বাড়াতেই
-না এই ঘর তোমার না এই ঘরের জিনিসগুলো তাই এই ঘরের কোনো জিনিস ব্যবহার কারার অনুমতি তোমার নেই!!
-তাহলে আমি কোথায় শোবো?
-মেঝেতে??
-কি?
-ইচ্ছে কারলে বারান্দা ফাকা আছে!!
অনু গোল গোল চোখে নির্ঝরের দিকে তাকিয়ে আছে।
এই লোকটা উন্নত শ্রেনীর অসভ্য।
অসভ্যতার সকল স্তর পাড় করে এসেছে।
কথাগুলো নিজের মনে মনে বলে অনু মেঝেতেই গুটি শুটি মেরে সুয়ে পড়ে।।।একটু কষ্ট হলেও
বেশ ক্লান্ত থাকায় ঘুম চলে এসেছে খুব দ্রুত।
আর তো মাত্র একটা দিন কালকে বাড়ি গিয়েই সায়নের কাছে চলে যাবে অনু সারা জীবনের জন্য।
সায়নের কথা মনে পড়তেই অনুর কাছে কোনো কষ্ট যেন কষ্টই মনে হচ্ছে না।
"আচ্ছা সায়ন কি মেনে নিবে আমাকে"
"নিবে না কেন যা হয়েছে নিজের ইচ্ছের বিরুদ্ধে এটাতো একরকম ধর্ষনই বলা যায়।সায়নের ভালোবাসার কাছে এসবই তুচ্ছ"
উওর গুলো নিজেই নিজের মতো সাজিয়েছে অনু।।
ভোর রাতে একটু চোখ মেলতেই অনু দেখতে পায় নির্ঝর নিচের দিকে ঝুকে উবু হয়ে তাকিয়ে আছে অনুর দিকে।
অনু বেশ ভায় পেয়ে যায়
"আবার কি কাল রাতের মতো"
"আচ্ছা অনু কখনো কি শুনেছো কোনো ছেলে কোনো মেয়ের নাক ফুলের প্রেমে পড়ে??
কখনো কি শুনেছো একটা মেয়ের গলুমলু গালের প্রেমে পড়ে??
কখনো কি শুনেছো কোনো ছেলে কোনো মেয়ের গালের মাঝখানে পড়া ছোট্ট টোলের প্রেমে পড়ে??
আমি পড়েছি....একবার নয় বার বার পড়েছি।
সে পড়ে প্রেমের পুড়ে ছারখার হয়েছি তবুও বলতে পারিনি"
কথাগুলো অনুর মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে।
-মি.চৌধুরী কি বলছেন কি এই সব??
-জানি না!!
কথাগুলো বলেই নির্ঝর ঘর থেকে বেড়িয়ে যায়।
সিড়ি বেয়ে নিচে নেমে সদর দরজার কাছে যেতেই
রাহেলা বেগম নির্ঝরের মায়ে চোখে পড়েন।ভোর বেলায় কোরআন তেলওয়াত করার অভ্যেস ওনার।একটু পিপাসা পেয়েছিলো তাই পানি খেতে এসে কাউকে যেতে দেখেন।নিচু গলায় ডেকে ওঠেন
-কে ওখানে
-আমি মা
-নির্ঝর
-এতো ভোর ভোর কই যাও আব্বু
-একটু বাহিরে যাবো ভালো লাগছে না....
আর কথা বাড়ান নি ওনি।
নির্ঝরের যখন মন খারাপ থাকে তখন সে বাহিরে চলে যায় হাটতে
খোলা আকাশ মৃদু বাতাস এসব নাকি নির্ঝরের কাছে মন ভালো কারার মেডিসিন।।
এখন বেশ ভোর হয়ে গেছে।তেমন আলো না ছড়ালেও বেশ সব কিছু স্পস্ট দেখা যাচ্ছে......
নির্ঝরের বলা কথাগুলো ভাবতে ভাবতেই বাহিরে আজানের ধ্বনি কানে যায়।
অনু ঝটপট নামাজ পড়ে নেয়।
নামাজের বিছানায় কেঁদে বুক ভসিয়ে দেয়
অনুর চাওয়া বলতে ঐ একজনই "সায়ন"
সকাল সকাল শ্বশুড় বাড়ির সবার আবদার তারা আজ নতুন বউয়ের হাতে বানানো নাস্তা খাবে।
অনুও রান্না ঘরে ঢুকে বেশ হেলেদুলে রান্না করছে।
আজই তার এ বাড়িতে শেষ দিন।
তাই না হয় একটু সবার আবদার রাখলাম তাতে দোষের কি!!
খাবার টেবিলে সবাইকে খাবার দেওয়া হয়ে গেছে যে যার মতো বসে পড়েছে।
তবে রাহেলা বেগম সোফায় বসে অনুর গতিবিধী লক্ষ করছে।
অনু সবার সাথে নিজের প্লেটটাও সাজিয়ে ফেলেছে।
এবার অনু শ্বাশুড়ি মায়ের দিকে চোখ পড়ে...
-অ্যান্টি আসুন না খেতে বসুন
এবার রাহেলা বেগম তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠে
-কোনো মেয়ের নিজের স্বামীর কথা ভুলে যেতে পারে হয়তো কিন্তু কোনো মা নিজের ছেলের কথা ভুলতে পারে না!!!
কথাগুলো বলে ওনি সিড়ি বেয়ে উপরে ওঠে যান।
"সত্যি তো ওনি সেই কখন বেরিয়েছে গেছে এখনো ফিরলো না তবে কি আর বাড়ি যাওয়া হবে না"
অনুর মনটা খারাপ হয়ে যায়.....
হটাৎই পেছন থেকে কেউ হুংকার দিয়ে ওঠে....
-অনু তারাতারি তৈরী হয়ে নাও।
অনু পেছন ফিরে তাকাতেই দেখে নির্ঝর দাড়িয়ে আছে।
অনুর আর খাওয়া হলো না খুশির ঠ্যালায় নাচতে নাচতে উপড়ে চলে যায়।
আজ অনু আর নির্ঝর জোড় বেধে অনুদের বাড়ি এসেছে।
বিয়ের পর প্রথম মেয়ে জামাই বাড়ি এসেছে অনুর বাবার আনন্দের অন্ত নেই।
সবাই নির্ঝরকে নিয়ে ব্যস্ত আর অনুর দুচোখ একজনকে খুজছে।
হটাৎই অনুর চোখ যায়...
দরজার আড়ালে....
দরজার কাছে যেতেই দেখে সোহা সেখানে ঠোট উল্টে কাঁদছে!!
সবার আগে আমার গল্প পড়তে চাইলে "নীল ক্যাফের ভালোবাসা" পেজে পাবেন।
অনুর দুচোখ সোহাকেই খুজছিলো।
অনু কোনো দিকে না তাকিয়ে সোহার কাছে ছোট লাগায়....
-সোহা তোর ভাই কোথায়??
-অনু আপু ভাইয়া ....
-আমাকে তোর সাথে যেতে বলেছে তো??
-(...)
-চল সবাই এখন মি.চৌধূরীকে নিয়ে ব্যস্ত এই সুযোগ তুই বাহিরে অপেক্ষা কর আমি আমার ব্যাগ নিয়ে আসছি....!!!
সোহা হলো সায়নের একমাত্র ছোট বোন
(বাকি পরিচয় পরে দিবো)
সোহা নিরবে বাহিরে বেরিয়ে যায়।
অনুও ঘরে গিয়ে গুটি গুটি পায়ে সদর দরজা পেরিয়ে বাহিরে চলে আসে।
সে চলে যাচ্ছে তার ভালোবাসার মানুষ সায়নের কাছে।
আর পেছনে ফেলে যাচ্ছে তার দুই দিনের স্বামীকে......
ছাদের এক কোনে চুপটি করে বসে আছে অনু।চোখ দিয়ে টুপটুপ করে পানি পরছে।এরকম কিছু হবে সেটা তার কল্পনারও বাহিরে।
বার বার সায়নের কথা মাথায় ঘুরছে।
"কোই ভালো তো তোমায় কম বাসিনি তাহলে এভাবে অভিমান করে ছেড়ে চলে গেলে কেন??"
সায়নের সাথে প্রথম দেখা প্রেম সব যেন চোখের সামনে ভাসছে।
এই তো ছাদের এই কর্নারটাই দাড়িয়েই সায়নের সাথে প্রথম চোখা চোখি হয়েছিলো অনুর.......
অতীতে ডুব দেয় অনু.....
সায়ন হলো অনুদের প্রতিবেশী।অনুর বাবা ব্যাংকে চাকুরি করে।ট্রান্সফার জব।
বাবার বদলির খাতিরে অনুরা পরিবার সহ ঢাকায় চলে আসে।নতুন জায়গা নতুন পরিবেশ সবমিলিয়ে বেশ মন খারাপ মন খারাপ পাচ্ছিলো অনুর। পুরানো কলেজ পুরানো বন্ধু সব ফেলে আসতে কারই বা ভালো লাগে।
তাই মন ভালো করার জন্য কানে হেড ফোন গুজে ছাদের উদ্দশ্যে রওনা হয় অনু।
খোলা আকাশ মন ভালো করার মেডিসিন।
বেশ কিছুক্ষন ছাদে হাটা হাটি করতেই চোখ যায় অনুদের ছাদ বারাবর পাশেই আরেকটা ছাদের দিকে।
ছাদের মাঝখানে বিছানা পেতে বইয়ে মুখ গুজে বসে আছে একটি ছেলে।চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা পড়নে হালকা নীল রঙ্গের টি শার্ট আর কালো রং-এর থ্রি কোয়াটার প্যান্ট।এমন ভাবে বইয়ের দিকে ঝুকে আছে যে তার মুখটাও ঠিক মতো দেখা যাচ্ছে।
কেন যেন ছেলেটাকে দেখে অনুর বেশ কৌতুহল জাগে।অনুর ছেলেটার মুখ দেখতে বেশ ইচ্ছে করছে।
বেশ কিছুবার উকি ঝুকি মারার পরও ছেলেটার মুখ দেখতে অক্ষম হয় সে।
শেষ বার উকি মারতেই ছেলেটা দুম করে দাড়িয়ে যায়।
অনুর সাথে চোখাচোখি হয়ে যায় তার।
অনু লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে ফেলে
ছেলেটা অনুর দিকে এগিয়ে আসে
-আপনি কি কিছু বলবেন আমায়??
-ইয়ে মানে না তো(অনু বেশ লজ্জা পেয়ে যায়)
-না আমার মনে হলো বোধয় কিছু বলতে চান তাই বার বার। আচ্ছা যাই হোক হ্যাই আমি সায়ন আহাম্মেদ।
-আমি অনু
ছোট্ট করে নিজের নামটা বলেই অনু ছুট লাগায় নিচে। কেন যেন তার বেশ লজ্জা করছে।
"ইশ কি লজ্জা"
সায়ন সেখানে দাড়িয়েই মুচকি দিয়ে হাসছে।
-লজ্জা পাওয়া ভালো। লজ্জা তো নারীর ভূষণ।।।।
এটাই ছিলো অনু আর সায়নের প্রথম দেখা।
তারপর আর কখনো কথা হয়নি দুজনের মাঝে।তবে দেখা হতো মাঝে মাঝে ছাদের এখানটাই
সায়ন প্রায়ই ছাদের এ পাশটায় বসে বসে পড়তো।মাঝে মাঝে দুজনের দেখা হতো চোখা চোখি হতো তবে কথা হতো না"
(বাকিটা পড়ে আরেক দিন বলবো)
অতীত কতো সুন্দর ছিলো।কোথা থেকে কি হয়ে গেল।
তখন সোহাকে পাঠিয়ে দেওয়ার পর
অনু বাড়ির সবার চোখে ফাকি দিয়ে এক কাপড়ে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে আশে।তার ধারনা সায়নই সোহাকে পাঠিয়েছে অনুকে নিয়ে যেতে।সে হয়তো তার প্রিয়তমার জন্য বাহিরে অপেক্ষা করছে।
সায়নের জন্য অনুর বুকে বেশ অভিমান জমে আছে....
অনু বাড়ি থেকে বেড়িয়ে ছুট লাগায় বাড়ির পেছনের দিকে।
সোহা অনুর কথা মতো সেখানেই অপেক্ষা করছিলো।।।
অনু সেখানে এসেই চারদিকে খোজাখুজি শুরু করে দেয়।
-কাকে খুজছো এভাবে??
-সোহা তোর ভাই কোথায়??
-কেন খোজছো তাকে??
বেশ ঝাঝালো কন্ঠে সোহা অনুকে প্রশ্নটা করে
অনু অবাক চোখে সোহার দিকে তাকিয়ে আছে
-মানে??
-মানে বুঝলে না বেশ তো হেলে দুলে বিয়েটা করে নিলে আবার বরকে নিয়ে বাপের বাড়িও এলে।বিয়ে করার আগে একবারও কি আমার ভাইয়ের কথা ভাবেছিলে???
-এসব কি বলছিস সোহা??
-ঠিকই তো বলছি!!!সেদিন তুমি আসো নি বলেই আজ!!
-কি??
-ভাইয়া আজই লন্ডন চলে যাচ্ছে আর মাত্র একুশ মিনিট পর ফ্লাইট।।।
সোহার কথায় অনু আকাশ থেকে পড়লো।
-সায়ন চলে যাচ্ছে???
-হুম্ম এই নাও মা এগুলো তোমায় ফিরিয়ে দিতে বলেছে...
সোহা অনুর হাতে কয়েকটা কাগজ ধরিয়ে দেয়।এগুলো কাগজ নয় এগুলো চিঠি যেগুলো অনু সায়নকে দিয়েছিলো।।
চিঠিগুলো অনুর হাতে ধরিয়ে দিয়ে সোহা পেছনে হাটতে শুরু করে।।।
কিছু দূর গিয়ে সোহা দাড়িয়ে যায়।
পেছন ফিরে সোহার দিকে তাকিয়ে বলতে শুরু করে...
-অনু আপু হয়তো তোমার ছলনায় আমার ভাইয়ের জীবনটা শূন্য হয়ে গেল।।।আমি আমার ভাইয়ের ভালোবাসা হারালাম....
ও আর হ্যা এই চিঠি গুলোর অস্তিত্ব এখানেই শেষ করে দাও না হলে যদি তোমার বরের হাতে চলে যায়।তোমার বড়লোক বড় কি তোমার মতো এরকম মেয়েকে মানবে.....???
ভালো থেকো!!
আর একটি কথাও বলেনি সোহা।চোখের পানি ফেলতে ফেলতে বাড়ির পথে হাটা ধরে সে।।।
অনু সেখানেই ঠায় দাড়িয়ে আছে।বিয়ের আগের দিনও অনুর সায়নের সাথে কথা হয়েছিলো।সায়নের কথা মতে সে রাতের মাঝা মাঝি সময়ে বাড়ির পেছন দিকটায় অপেক্ষা করবে অনুর জন্য। তারপর অনুকে নিয়ে পালিয়ে যাবে অনেক দূরে।।।
অনু এসেছিলো।সারা রাত অপেক্ষা করেছে সায়নের জন্য।কিন্তু সে তো আসে নি।তারপর দিন নির্ঝরের সাথে বিয়ে হয়ে যায় অনুর।।
অনু চিঠিগুলো মুষ্টি বদ্ধ করে বাড়ি ফিরে আসে ছাদের এককোনে গুটিশুটি মেরে বসে পড়ে। সায়নের সাথে সম্পর্কের শুরুটাও ছিলো এই ছাদ আবার হয়তো শেষটাও এখানেই হতে চলেছে।।
"আচ্ছা তবে কি ছলনা আমি করেছি তুমিই তো আসো নি বার বার ডেকেছি তবুও আসো নি মুখ ফিরিয়ে রেখেছিলে।আজ সব সম্পর্কের ইতি টেনে পাড়ি জমালে সদূর পাড়ে।তবুও ছলনাময়ী আমিই হলাম"
কথাগুলো বলেই অনু হাউ মাউ করে কাদতে শুরু করে।
এভাবে কতো সময় কেটেছে জানা নেই।
অনু যখন চোখ খোলে তখন বেশ রাত হয়ে গেছে।নির্ঝর বালিশে হেলান দিয়ে একটা ডায়রিতে কিছু একটা লিখছিলো আর অনু নির্ঝরের বুকের উপর শুেয় আছে একে বারে নির্ঝরকে জাপটে ধরে।।
অনু ধরফর করে উঠে দাড়ায়।এদিক সেদিক চোখ বুলায়, না এটা তো তার ঘর নেই।এই ঘরটা সাথে অনুর বাড়ির কোনো ঘরেরই মিল নেই.....
একটু মন দিয়ে পড়ুন--
পরবর্তী অংশ অর্থাৎ সবগুলো পর্ব এই I'd তে দেয়া হবে, পুরো গল্পটি পড়তে রিকুয়েস্ট দিয়ে সাথেই থাকুন। ভালো ভালো গল্প পেতে এই আইডির সাথেই থাকুন!অনেক সময় গ্রুপে গল্প পোস্ট হয় না। তাই গ্রুপে গল্প পেতে সমস্যা হলে ফলো অথবা রিকুয়েস্ট দিয়ে রাখতে পারেন ধন্যবাদ।
সে তো বাবার কাছে ছিলো।ঘরে ড্রমি লাইট জ্বালানো ছিলো তাই তেমন কিছু দেখাও যাচ্ছে না।।
অনু বার বার মনে করার চেষ্ট করছে এটা কোন জায়গা
-মি.চৌধূরী আমাকে কোথায়। এনেছেন??
নির্ঝর অনুর দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে উওর দেয়
-যে দিন আমি তোমার নাম নিয়ে তিন বার কবুল বলি সেদিনই তোমার পায়ে এক অদৃশ্য শিকল পড়িয়ে দিই আর যখন তুমি আমার নামে তিন তিন বার কবুল বলো সেদিনই তুমি নিজে নিজেই সেই শিকল পায়ে বেঁধে নাও অর্থাৎ তুমি চাইলেও আমার থেকে দূরে যেতে পারবে না।কারণ তোমার অস্তিস্ত এখন আমাতেই বন্দী।আমি যে তোমার স্বামী।।।
অনুর চোখ বেয়ে আবার বৃষ্টি নামে।
কথাগুলো সায়ন বললে বোধয় ভালো শুনাতো।।
নির্ঝর ওঠে গিয়ে ঘরের আলোটা জ্বালিয়ে দেয়।অনু ভালো করে তাকিয়ে দেখে এটা নির্ঝরের ঘর।নির্ঝর তাকে আবার এ বাড়ি নিয়ে এসেছে।সকালেই তো অনু ঘরটাকে বিদায় জানিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিলো আবার ফিরতে হলো এই ঠিকানায়
বিকেলে,
অনুকে অনেক খোজাখুজরি পর যখন অনুর দেখা মিলছিলো না তখন অনুর বাবা মায়ের মুখ শুকিয়ে যায়।তাদের ধারনা বোধয় তাদের একমাত্র মেয়ে পালিয়ে গিয়েছে।
কিন্তু নির্ঝর কি মনে করে ছাদে চলে যায়।ছাদে যেতেই চোখ পড়ে অনুর দিকে অনু ছাদের দেয়াল ঘেষে পড়ে রয়েছে।নির্ঝরের বুক ধক করে ওঠে
"অনু কিছু করে বসলো না তো??"
অনুর কাছে যেতেই দেখে না সে অঙ্গান হয়ে গিয়েছে।।
নির্ঝর একটা স্বস্থির নিঃশ্বাস ফেলে অনুকে কোলে তুলে নেয়।
তারপর আর একমুহূর্ত সেখানে দাড়ায় না।
অনুকে কোলে নিয়ে হাটা ধরে গাড়ির দিকে।
শ্বশুড় বাড়ির সবার কথা অগ্রহ্য করে নির্ঝর অনুকে নিয়ে বাড়ি চলে আসে।।
কান্না কাটির ফলে অনুর বেশ মাথা ধরেছে.....
তাই অনু কথা না বাড়িয়ে বালিশ নিয়ে ওঠে আশে।তার জায়গা যে এ ঘরের মেঝেতে।
অনু ওঠে আসতেই নির্ঝর অনুর কোমড় জড়িয়ে ধরে।তারপর অনুর খোলা পেটে মুখ ডুবিয়ে দেয়।অনু ঠায় দাড়িয়ে আছে.....
হয়তো এটাই তার নিয়তি।এখন থেকে যা হবে সব তাকে মানতে হবে।
হাজার হোক এটাই অনুর নিয়তি।।। পরের পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
"না না অসম্ভব....."
বউ ভাতের অনুষ্ঠান শেষে সবাইকে বিদায় দিয়ে অনু ঘরে চলে আসে।পোশাক পাল্টে....
বেশ আয়েশ করে বিছানায় বসতেই নির্ঝরের আগমন ঘটে।
নির্ঝরকে দেখে বিছানার একপাশে গুটিসুটি মেরে বসে পড়ে অনু।
নির্ঝর ঘরে ঢুকে অনুর দিকে তাকাতেই অনুর কাল রাতের কথা মনে পড়ে যায়।
নির্ঝরকে এগিয়ে আসতে দেখে অনু দুম করে দাড়িয়ে যায়।
একটা ছোট্ট ঢোক গিলে বলতে শুরু করে.....
-দেখুন মি.চৌধুরী আপনার সাথে আমাকে জোড় করে বিয়ে দেওয়া হয়েছে।আমি অন্য কাউকে ভালোবাসতাম। আর এখনো বাসি।কথাগুলো আমি আপনাকে কালই বলতাম কিন্তু আপনি তো আপনার কাজে না না স্বামীগিরি ফলাতে ব্যস্ত ছিলেন তাই বলার সুযোগটাই হয়ে ওঠে নি.....কিন্তু শুনে রাখুন যে দিন সে ফিরে আসবে সেদিন আমি...
বাকি কথা বলার সুযোগ হয়নি অনুর নির্ঝর অনুর চুলে মুঠি ধরে নিজে দিকে টেনে নেয়।তারপর ঠোটে ঠোট মিলিয়ে দেয়।
অনু বার বার হাত পা ছুড়ছে কিন্তু কিছু করার উপায় নেই।দুচোখ
অনু নির্ঝরকে সর্ব শক্তি দিয়ে ধাক্কা দিতেই নির্ঝর পেছনে সরে যায়।
-আপনি কি চান বলুনতো এভাবে বার বার জোড় করছেন কেন।যদি এতোই শরীরের নেশা হয়ে থাকে তাহলে পতিতা পল্লী গেলেই পারতেন। কেন আমার আর সায়নের মাঝে এলেন???
নির্ঝর বাক রুদ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে অনুর দিকে।
"তুমি তার কাছে যেতে চাও যে তোমার সবটা চায় না কিন্তু তার কাছে যেতে চাও না যে তোমার ভালোমন্দ সবটা চায়"
কথাগুলো বলেই নির্ঝর বিছানা থেকে একটা বালিস ঢিল মেরে অনুর দিকে ছুড়ে দেয়।
অনু বালিসটা হাতে নিয়ে বাঁক রুদ্ধ হয়ে দাড়িয়ে আছে।
আর কোনো কথা হয়নি দুজনের মাঝে।
নির্ঝর খাটের উপর উবু হয়ে শুয়ে পড়ে আর অনু এখনো ওভাবেই দাড়িয়ে আছে।
-লাইটটা ওফ করে দাও (অনুর দিকে না তাকিয়ে)
অনু একটা ভেংচি কেটে সোফার দিকে পা বাড়াতেই
-না এই ঘর তোমার না এই ঘরের জিনিসগুলো তাই এই ঘরের কোনো জিনিস ব্যবহার কারার অনুমতি তোমার নেই!!
-তাহলে আমি কোথায় শোবো?
-মেঝেতে??
-কি?
-ইচ্ছে কারলে বারান্দা ফাকা আছে!!
অনু গোল গোল চোখে নির্ঝরের দিকে তাকিয়ে আছে।
এই লোকটা উন্নত শ্রেনীর অসভ্য।
অসভ্যতার সকল স্তর পাড় করে এসেছে।
কথাগুলো নিজের মনে মনে বলে অনু মেঝেতেই গুটি শুটি মেরে সুয়ে পড়ে।।।একটু কষ্ট হলেও
বেশ ক্লান্ত থাকায় ঘুম চলে এসেছে খুব দ্রুত।
আর তো মাত্র একটা দিন কালকে বাড়ি গিয়েই সায়নের কাছে চলে যাবে অনু সারা জীবনের জন্য।
সায়নের কথা মনে পড়তেই অনুর কাছে কোনো কষ্ট যেন কষ্টই মনে হচ্ছে না।
"আচ্ছা সায়ন কি মেনে নিবে আমাকে"
"নিবে না কেন যা হয়েছে নিজের ইচ্ছের বিরুদ্ধে এটাতো একরকম ধর্ষনই বলা যায়।সায়নের ভালোবাসার কাছে এসবই তুচ্ছ"
উওর গুলো নিজেই নিজের মতো সাজিয়েছে অনু।।
ভোর রাতে একটু চোখ মেলতেই অনু দেখতে পায় নির্ঝর নিচের দিকে ঝুকে উবু হয়ে তাকিয়ে আছে অনুর দিকে।
অনু বেশ ভায় পেয়ে যায়
"আবার কি কাল রাতের মতো"
"আচ্ছা অনু কখনো কি শুনেছো কোনো ছেলে কোনো মেয়ের নাক ফুলের প্রেমে পড়ে??
কখনো কি শুনেছো একটা মেয়ের গলুমলু গালের প্রেমে পড়ে??
কখনো কি শুনেছো কোনো ছেলে কোনো মেয়ের গালের মাঝখানে পড়া ছোট্ট টোলের প্রেমে পড়ে??
আমি পড়েছি....একবার নয় বার বার পড়েছি।
সে পড়ে প্রেমের পুড়ে ছারখার হয়েছি তবুও বলতে পারিনি"
কথাগুলো অনুর মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে।
-মি.চৌধুরী কি বলছেন কি এই সব??
-জানি না!!
কথাগুলো বলেই নির্ঝর ঘর থেকে বেড়িয়ে যায়।
সিড়ি বেয়ে নিচে নেমে সদর দরজার কাছে যেতেই
রাহেলা বেগম নির্ঝরের মায়ে চোখে পড়েন।ভোর বেলায় কোরআন তেলওয়াত করার অভ্যেস ওনার।একটু পিপাসা পেয়েছিলো তাই পানি খেতে এসে কাউকে যেতে দেখেন।নিচু গলায় ডেকে ওঠেন
-কে ওখানে
-আমি মা
-নির্ঝর
-এতো ভোর ভোর কই যাও আব্বু
-একটু বাহিরে যাবো ভালো লাগছে না....
আর কথা বাড়ান নি ওনি।
নির্ঝরের যখন মন খারাপ থাকে তখন সে বাহিরে চলে যায় হাটতে
খোলা আকাশ মৃদু বাতাস এসব নাকি নির্ঝরের কাছে মন ভালো কারার মেডিসিন।।
এখন বেশ ভোর হয়ে গেছে।তেমন আলো না ছড়ালেও বেশ সব কিছু স্পস্ট দেখা যাচ্ছে......
নির্ঝরের বলা কথাগুলো ভাবতে ভাবতেই বাহিরে আজানের ধ্বনি কানে যায়।
অনু ঝটপট নামাজ পড়ে নেয়।
নামাজের বিছানায় কেঁদে বুক ভসিয়ে দেয়
অনুর চাওয়া বলতে ঐ একজনই "সায়ন"
সকাল সকাল শ্বশুড় বাড়ির সবার আবদার তারা আজ নতুন বউয়ের হাতে বানানো নাস্তা খাবে।
অনুও রান্না ঘরে ঢুকে বেশ হেলেদুলে রান্না করছে।
আজই তার এ বাড়িতে শেষ দিন।
তাই না হয় একটু সবার আবদার রাখলাম তাতে দোষের কি!!
খাবার টেবিলে সবাইকে খাবার দেওয়া হয়ে গেছে যে যার মতো বসে পড়েছে।
তবে রাহেলা বেগম সোফায় বসে অনুর গতিবিধী লক্ষ করছে।
অনু সবার সাথে নিজের প্লেটটাও সাজিয়ে ফেলেছে।
এবার অনু শ্বাশুড়ি মায়ের দিকে চোখ পড়ে...
-অ্যান্টি আসুন না খেতে বসুন
এবার রাহেলা বেগম তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠে
-কোনো মেয়ের নিজের স্বামীর কথা ভুলে যেতে পারে হয়তো কিন্তু কোনো মা নিজের ছেলের কথা ভুলতে পারে না!!!
কথাগুলো বলে ওনি সিড়ি বেয়ে উপরে ওঠে যান।
"সত্যি তো ওনি সেই কখন বেরিয়েছে গেছে এখনো ফিরলো না তবে কি আর বাড়ি যাওয়া হবে না"
অনুর মনটা খারাপ হয়ে যায়.....
হটাৎই পেছন থেকে কেউ হুংকার দিয়ে ওঠে....
-অনু তারাতারি তৈরী হয়ে নাও।
অনু পেছন ফিরে তাকাতেই দেখে নির্ঝর দাড়িয়ে আছে।
অনুর আর খাওয়া হলো না খুশির ঠ্যালায় নাচতে নাচতে উপড়ে চলে যায়।
আজ অনু আর নির্ঝর জোড় বেধে অনুদের বাড়ি এসেছে।
বিয়ের পর প্রথম মেয়ে জামাই বাড়ি এসেছে অনুর বাবার আনন্দের অন্ত নেই।
সবাই নির্ঝরকে নিয়ে ব্যস্ত আর অনুর দুচোখ একজনকে খুজছে।
হটাৎই অনুর চোখ যায়...
দরজার আড়ালে....
দরজার কাছে যেতেই দেখে সোহা সেখানে ঠোট উল্টে কাঁদছে!!
সবার আগে আমার গল্প পড়তে চাইলে "নীল ক্যাফের ভালোবাসা" পেজে পাবেন।
অনুর দুচোখ সোহাকেই খুজছিলো।
অনু কোনো দিকে না তাকিয়ে সোহার কাছে ছোট লাগায়....
-সোহা তোর ভাই কোথায়??
-অনু আপু ভাইয়া ....
-আমাকে তোর সাথে যেতে বলেছে তো??
-(...)
-চল সবাই এখন মি.চৌধূরীকে নিয়ে ব্যস্ত এই সুযোগ তুই বাহিরে অপেক্ষা কর আমি আমার ব্যাগ নিয়ে আসছি....!!!
সোহা হলো সায়নের একমাত্র ছোট বোন
(বাকি পরিচয় পরে দিবো)
সোহা নিরবে বাহিরে বেরিয়ে যায়।
অনুও ঘরে গিয়ে গুটি গুটি পায়ে সদর দরজা পেরিয়ে বাহিরে চলে আসে।
সে চলে যাচ্ছে তার ভালোবাসার মানুষ সায়নের কাছে।
আর পেছনে ফেলে যাচ্ছে তার দুই দিনের স্বামীকে......
ছাদের এক কোনে চুপটি করে বসে আছে অনু।চোখ দিয়ে টুপটুপ করে পানি পরছে।এরকম কিছু হবে সেটা তার কল্পনারও বাহিরে।
বার বার সায়নের কথা মাথায় ঘুরছে।
"কোই ভালো তো তোমায় কম বাসিনি তাহলে এভাবে অভিমান করে ছেড়ে চলে গেলে কেন??"
সায়নের সাথে প্রথম দেখা প্রেম সব যেন চোখের সামনে ভাসছে।
এই তো ছাদের এই কর্নারটাই দাড়িয়েই সায়নের সাথে প্রথম চোখা চোখি হয়েছিলো অনুর.......
অতীতে ডুব দেয় অনু.....
সায়ন হলো অনুদের প্রতিবেশী।অনুর বাবা ব্যাংকে চাকুরি করে।ট্রান্সফার জব।
বাবার বদলির খাতিরে অনুরা পরিবার সহ ঢাকায় চলে আসে।নতুন জায়গা নতুন পরিবেশ সবমিলিয়ে বেশ মন খারাপ মন খারাপ পাচ্ছিলো অনুর। পুরানো কলেজ পুরানো বন্ধু সব ফেলে আসতে কারই বা ভালো লাগে।
তাই মন ভালো করার জন্য কানে হেড ফোন গুজে ছাদের উদ্দশ্যে রওনা হয় অনু।
খোলা আকাশ মন ভালো করার মেডিসিন।
বেশ কিছুক্ষন ছাদে হাটা হাটি করতেই চোখ যায় অনুদের ছাদ বারাবর পাশেই আরেকটা ছাদের দিকে।
ছাদের মাঝখানে বিছানা পেতে বইয়ে মুখ গুজে বসে আছে একটি ছেলে।চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা পড়নে হালকা নীল রঙ্গের টি শার্ট আর কালো রং-এর থ্রি কোয়াটার প্যান্ট।এমন ভাবে বইয়ের দিকে ঝুকে আছে যে তার মুখটাও ঠিক মতো দেখা যাচ্ছে।
কেন যেন ছেলেটাকে দেখে অনুর বেশ কৌতুহল জাগে।অনুর ছেলেটার মুখ দেখতে বেশ ইচ্ছে করছে।
বেশ কিছুবার উকি ঝুকি মারার পরও ছেলেটার মুখ দেখতে অক্ষম হয় সে।
শেষ বার উকি মারতেই ছেলেটা দুম করে দাড়িয়ে যায়।
অনুর সাথে চোখাচোখি হয়ে যায় তার।
অনু লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে ফেলে
ছেলেটা অনুর দিকে এগিয়ে আসে
-আপনি কি কিছু বলবেন আমায়??
-ইয়ে মানে না তো(অনু বেশ লজ্জা পেয়ে যায়)
-না আমার মনে হলো বোধয় কিছু বলতে চান তাই বার বার। আচ্ছা যাই হোক হ্যাই আমি সায়ন আহাম্মেদ।
-আমি অনু
ছোট্ট করে নিজের নামটা বলেই অনু ছুট লাগায় নিচে। কেন যেন তার বেশ লজ্জা করছে।
"ইশ কি লজ্জা"
সায়ন সেখানে দাড়িয়েই মুচকি দিয়ে হাসছে।
-লজ্জা পাওয়া ভালো। লজ্জা তো নারীর ভূষণ।।।।
এটাই ছিলো অনু আর সায়নের প্রথম দেখা।
তারপর আর কখনো কথা হয়নি দুজনের মাঝে।তবে দেখা হতো মাঝে মাঝে ছাদের এখানটাই
সায়ন প্রায়ই ছাদের এ পাশটায় বসে বসে পড়তো।মাঝে মাঝে দুজনের দেখা হতো চোখা চোখি হতো তবে কথা হতো না"
(বাকিটা পড়ে আরেক দিন বলবো)
অতীত কতো সুন্দর ছিলো।কোথা থেকে কি হয়ে গেল।
তখন সোহাকে পাঠিয়ে দেওয়ার পর
অনু বাড়ির সবার চোখে ফাকি দিয়ে এক কাপড়ে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে আশে।তার ধারনা সায়নই সোহাকে পাঠিয়েছে অনুকে নিয়ে যেতে।সে হয়তো তার প্রিয়তমার জন্য বাহিরে অপেক্ষা করছে।
সায়নের জন্য অনুর বুকে বেশ অভিমান জমে আছে....
অনু বাড়ি থেকে বেড়িয়ে ছুট লাগায় বাড়ির পেছনের দিকে।
সোহা অনুর কথা মতো সেখানেই অপেক্ষা করছিলো।।।
অনু সেখানে এসেই চারদিকে খোজাখুজি শুরু করে দেয়।
-কাকে খুজছো এভাবে??
-সোহা তোর ভাই কোথায়??
-কেন খোজছো তাকে??
বেশ ঝাঝালো কন্ঠে সোহা অনুকে প্রশ্নটা করে
অনু অবাক চোখে সোহার দিকে তাকিয়ে আছে
-মানে??
-মানে বুঝলে না বেশ তো হেলে দুলে বিয়েটা করে নিলে আবার বরকে নিয়ে বাপের বাড়িও এলে।বিয়ে করার আগে একবারও কি আমার ভাইয়ের কথা ভাবেছিলে???
-এসব কি বলছিস সোহা??
-ঠিকই তো বলছি!!!সেদিন তুমি আসো নি বলেই আজ!!
-কি??
-ভাইয়া আজই লন্ডন চলে যাচ্ছে আর মাত্র একুশ মিনিট পর ফ্লাইট।।।
সোহার কথায় অনু আকাশ থেকে পড়লো।
-সায়ন চলে যাচ্ছে???
-হুম্ম এই নাও মা এগুলো তোমায় ফিরিয়ে দিতে বলেছে...
সোহা অনুর হাতে কয়েকটা কাগজ ধরিয়ে দেয়।এগুলো কাগজ নয় এগুলো চিঠি যেগুলো অনু সায়নকে দিয়েছিলো।।
চিঠিগুলো অনুর হাতে ধরিয়ে দিয়ে সোহা পেছনে হাটতে শুরু করে।।।
কিছু দূর গিয়ে সোহা দাড়িয়ে যায়।
পেছন ফিরে সোহার দিকে তাকিয়ে বলতে শুরু করে...
-অনু আপু হয়তো তোমার ছলনায় আমার ভাইয়ের জীবনটা শূন্য হয়ে গেল।।।আমি আমার ভাইয়ের ভালোবাসা হারালাম....
ও আর হ্যা এই চিঠি গুলোর অস্তিত্ব এখানেই শেষ করে দাও না হলে যদি তোমার বরের হাতে চলে যায়।তোমার বড়লোক বড় কি তোমার মতো এরকম মেয়েকে মানবে.....???
ভালো থেকো!!
আর একটি কথাও বলেনি সোহা।চোখের পানি ফেলতে ফেলতে বাড়ির পথে হাটা ধরে সে।।।
অনু সেখানেই ঠায় দাড়িয়ে আছে।বিয়ের আগের দিনও অনুর সায়নের সাথে কথা হয়েছিলো।সায়নের কথা মতে সে রাতের মাঝা মাঝি সময়ে বাড়ির পেছন দিকটায় অপেক্ষা করবে অনুর জন্য। তারপর অনুকে নিয়ে পালিয়ে যাবে অনেক দূরে।।।
অনু এসেছিলো।সারা রাত অপেক্ষা করেছে সায়নের জন্য।কিন্তু সে তো আসে নি।তারপর দিন নির্ঝরের সাথে বিয়ে হয়ে যায় অনুর।।
অনু চিঠিগুলো মুষ্টি বদ্ধ করে বাড়ি ফিরে আসে ছাদের এককোনে গুটিশুটি মেরে বসে পড়ে। সায়নের সাথে সম্পর্কের শুরুটাও ছিলো এই ছাদ আবার হয়তো শেষটাও এখানেই হতে চলেছে।।
"আচ্ছা তবে কি ছলনা আমি করেছি তুমিই তো আসো নি বার বার ডেকেছি তবুও আসো নি মুখ ফিরিয়ে রেখেছিলে।আজ সব সম্পর্কের ইতি টেনে পাড়ি জমালে সদূর পাড়ে।তবুও ছলনাময়ী আমিই হলাম"
কথাগুলো বলেই অনু হাউ মাউ করে কাদতে শুরু করে।
এভাবে কতো সময় কেটেছে জানা নেই।
অনু যখন চোখ খোলে তখন বেশ রাত হয়ে গেছে।নির্ঝর বালিশে হেলান দিয়ে একটা ডায়রিতে কিছু একটা লিখছিলো আর অনু নির্ঝরের বুকের উপর শুেয় আছে একে বারে নির্ঝরকে জাপটে ধরে।।
অনু ধরফর করে উঠে দাড়ায়।এদিক সেদিক চোখ বুলায়, না এটা তো তার ঘর নেই।এই ঘরটা সাথে অনুর বাড়ির কোনো ঘরেরই মিল নেই.....
একটু মন দিয়ে পড়ুন--
পরবর্তী অংশ অর্থাৎ সবগুলো পর্ব এই I'd তে দেয়া হবে, পুরো গল্পটি পড়তে রিকুয়েস্ট দিয়ে সাথেই থাকুন। ভালো ভালো গল্প পেতে এই আইডির সাথেই থাকুন!অনেক সময় গ্রুপে গল্প পোস্ট হয় না। তাই গ্রুপে গল্প পেতে সমস্যা হলে ফলো অথবা রিকুয়েস্ট দিয়ে রাখতে পারেন ধন্যবাদ।
সে তো বাবার কাছে ছিলো।ঘরে ড্রমি লাইট জ্বালানো ছিলো তাই তেমন কিছু দেখাও যাচ্ছে না।।
অনু বার বার মনে করার চেষ্ট করছে এটা কোন জায়গা
-মি.চৌধূরী আমাকে কোথায়। এনেছেন??
নির্ঝর অনুর দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে উওর দেয়
-যে দিন আমি তোমার নাম নিয়ে তিন বার কবুল বলি সেদিনই তোমার পায়ে এক অদৃশ্য শিকল পড়িয়ে দিই আর যখন তুমি আমার নামে তিন তিন বার কবুল বলো সেদিনই তুমি নিজে নিজেই সেই শিকল পায়ে বেঁধে নাও অর্থাৎ তুমি চাইলেও আমার থেকে দূরে যেতে পারবে না।কারণ তোমার অস্তিস্ত এখন আমাতেই বন্দী।আমি যে তোমার স্বামী।।।
অনুর চোখ বেয়ে আবার বৃষ্টি নামে।
কথাগুলো সায়ন বললে বোধয় ভালো শুনাতো।।
নির্ঝর ওঠে গিয়ে ঘরের আলোটা জ্বালিয়ে দেয়।অনু ভালো করে তাকিয়ে দেখে এটা নির্ঝরের ঘর।নির্ঝর তাকে আবার এ বাড়ি নিয়ে এসেছে।সকালেই তো অনু ঘরটাকে বিদায় জানিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিলো আবার ফিরতে হলো এই ঠিকানায়
বিকেলে,
অনুকে অনেক খোজাখুজরি পর যখন অনুর দেখা মিলছিলো না তখন অনুর বাবা মায়ের মুখ শুকিয়ে যায়।তাদের ধারনা বোধয় তাদের একমাত্র মেয়ে পালিয়ে গিয়েছে।
কিন্তু নির্ঝর কি মনে করে ছাদে চলে যায়।ছাদে যেতেই চোখ পড়ে অনুর দিকে অনু ছাদের দেয়াল ঘেষে পড়ে রয়েছে।নির্ঝরের বুক ধক করে ওঠে
"অনু কিছু করে বসলো না তো??"
অনুর কাছে যেতেই দেখে না সে অঙ্গান হয়ে গিয়েছে।।
নির্ঝর একটা স্বস্থির নিঃশ্বাস ফেলে অনুকে কোলে তুলে নেয়।
তারপর আর একমুহূর্ত সেখানে দাড়ায় না।
অনুকে কোলে নিয়ে হাটা ধরে গাড়ির দিকে।
শ্বশুড় বাড়ির সবার কথা অগ্রহ্য করে নির্ঝর অনুকে নিয়ে বাড়ি চলে আসে।।
কান্না কাটির ফলে অনুর বেশ মাথা ধরেছে.....
তাই অনু কথা না বাড়িয়ে বালিশ নিয়ে ওঠে আশে।তার জায়গা যে এ ঘরের মেঝেতে।
অনু ওঠে আসতেই নির্ঝর অনুর কোমড় জড়িয়ে ধরে।তারপর অনুর খোলা পেটে মুখ ডুবিয়ে দেয়।অনু ঠায় দাড়িয়ে আছে.....
হয়তো এটাই তার নিয়তি।এখন থেকে যা হবে সব তাকে মানতে হবে।
হাজার হোক এটাই অনুর নিয়তি।।। পরের পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
কোন মন্তব্য নেই
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন