Header Ads

Header ADS

আমার বিয়ের ঠিক দুই দিন আগে আমার হবু বউয়ের বাজে ভিডিও ভাইরাল। (রোমাঞ্চকর গল্প)


আমার বিয়ের ঠিক দুই দিন আগে আমার হবু বউয়ের বাজে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
এক রাতেই শহরের দেয়ালে বাজে ছবি দিয়ে পোস্টার লাগিয়ে ভর্তি করে দিয়েছে। ভার্চুয়াল জুড়ে এখন মিলির বাজে ছবি এবং বাজে ভিডিও ভেসে বেড়াচ্ছে। বিয়ের জন্য সবকিছু ঠিকঠাক করে রাখা হয়েছিল। কিন্তু এক মুহুর্তে সবকিছু তছনছ হয়ে গেলো।

খানিকটা অবাক হয়ে গেলাম কারণ মিলিকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি। মিলিতো এই ধরনের কোন মেয়ে না। কিন্তু হঠাৎ করে এভাবে মিলিকে বাজে বানানোর উদ্দেশ্য কি আর কে'ই বা এমন করল। মিলির সাথে আমার কোনো প্রেম ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল না। কিন্তু আমি নিজ থেকে মিলিকে অনেক পছন্দ করি।
আমি পেশায় একজন ডাক্তার আর মিলি আমি যে হসপিটালে জব করি সেই হসপিটালের একজন ডাক্তার।আমরা দুজনেই পেশায় ডাক্তার। ওর সাথে আমার পরিচয় দুই বছর আগে থেকেই আমরা দুজনে একসাথে এমবিবিএস পাশ করে এই হসপিটালে জয়েন করেছি।

আমার যেহেতু মিলিকে পছন্দ সেহেতু আমার ফ্যামিলির অমতের কোনো কারনই নেই।আমার কথা অনুযায়ী আমার বাবা মা মিলির বাবা মায়ের সাথে বিয়ের ব্যাপারে কথা বলেছে।তাদেরও কোনো ধরনের আপত্তি ছিলো না।

দুই পরিবারে কথা বলে বিয়ের দিন তারিখ সব ঠিকঠাক করে রাখা হয়েছিল। আমি আমার বন্ধুবান্ধব বা আমার যতগুলো স্টাফ ছিল সবাইকে আমি আমার বিয়ের দাওয়াত দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করেই এমন একটা পরিস্থিতি হয়ে গেছে যে আমি এখন কারো সামনে মুখ দেখাতে পারব না।

মিলির আপত্তিকর ভিডিও ছবি ভাইরাল এরপরে আমি মিলির সাথে দেখা করতে বাসায় যাই। আমি আসলে বুঝতে পারি যে কেউ হয়তো শত্রুতা ভাবে মিলিকে ফাঁসিয়েছে। মিলি শুধু আমাকে এটুকুই বলেছিল যে আগে কখনো কারো সাথে রিলেশনে জড়ায়নি।

আমার একটা ফ্রেন্ড পুলিশ অফিসার। মিলির এই ব্যাপার নিয়ে আমি আমার ফ্রেন্ডকে জানাই

আমি জানি যে মিলির কোন দোষ নেই কিন্তু আমি আমার ফ্যামিলিকে কিভাবে বুঝাবো যে মিলি নির্দোষ। হয়তো কেউ কোন বাজে ভিডিও সাথে মিলির ছবি ম্যাচিং করে এমন একটা পরিস্থিতি ঘটিয়েছে।

মিলির এইসব ঘটনা শুনে আমার বাবা আমাদের বিয়ে ক্যান্সেল করে দিয়েছে। আমার বাবা বেক্তিগতভাবে  মিলির বাবাকে অনেক অপমান করেছে। আমি আমার বাবাকে কিছু বলে বুঝাতে পারি নাই।  আমি শুধু মিলিকে আশ্বাস দিলাম যারা মিলির এত সর্বনাশ করেছে তাদের যেকোনো ভাবে খুঁজে বের করার চেষ্টা করবো।মিলি সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডাক্তারি করবে না।

মিলি রিজেইন দিয়ে অনেক দূরে চলে গেছে। মিলির সাথে আমার প্রায়ই কথা হতো,কিন্তু মিলি কোথায় আছে সেটা আর আমাকে জানায়নি। আমি অনেক রিকোয়েস্ট করেছি ঠিকানাটা আমাকে জানাতে। কিন্তু না আমি ব্যর্থ হয়েছি ঠিকানাটা জানতে।

এর মাঝে হঠাৎ করে মিলি আমাকে ফোন দেয়। ফোন দিয়ে বলে যে মিলি আমার সাথে দেখা করতে চায়। আমি সময় করে মিলির সাথে দেখা করি...
একটু মন দিয়ে পড়ুন--

- আবিদ।!আপনি আমাকে চিনেন। যেহেতু আমরা দুজনে একই মেডিকেলে আছি। বিশ্বাস করুন আমার  অন্য কারো সাথে কোন ঝামেলা ছিল না কিন্তু দেখেন কে বা কারা আমাকে এভাবে ফাঁসিয়ে দিয়েছে। আমার বাবা-মাকে লোকজনের কাছে অপমান করেছে। লোকজনের কাছে মুখ দেখাব কিভাবে?

- মিলি আমি আপনাকে শুধু একটা কথাই বলবো যারা আপনার এভাবে ক্ষতি করেছে তারা একসময় পাপের শাস্তি ঠিকই পেয়ে যাবে। কিন্তু আপনার রিজেইন নেওয়া ঠিক হয়নি। আপনি অনেক কষ্ট করে পড়াশোনা করে ডাক্তারী পাশ করেছেন। আপনার বাবা-মা আপনাকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখেছেন। তাদের স্বপ্নটা আপনার নষ্ট করা ঠিক হয়নি। আপনার হাতে এখনো সময় আছে রিজেইন লেটার তুলে নিয়ে আপনি আবার ডাক্তার হয়ে ফিরে আসুন। আর আমি আমার বাবা মাকে বুঝাবো আপনাকে নিয়ে যা হয়েছে কিনা তাতে আমার কোন আপত্তি নাই  আর হ্যাঁ আমি আপনার বিষয়টা দেখবো।

- আপনার আর কিছুই দেখতে হবে না। আসলে আমি এই শহরের আশপাশে রয়েছি। আমাদের দেশের বাড়িটা পুরোপুরি ঠিক না করে সেখানে যেতে পারতেছিনা। আপনার সাথে আমার একটা জরুরী কথা ছিল সেজন্য আপনাকে এখানে আসতে বলা।

- জি বলুন। কি বলবেন আমাকে আমি আপনাকে? শুধু একটাই রিকোয়েস্ট করবো আবার মেডিকেল এ জয়েন করুন।

- ডাক্তার নেহাল আমাকে বিয়ের করার প্রস্তাব দিয়েছিলো। আমি সরাসরি না করে দিয়েছিলাম কারণ তাকে আমার মোটেও ভালো লাগে না। আমি বলছি না যে সে একটা খারাপ মানুষ। যথেষ্ট ভালো তারপরও নিজের মন থেকে আমি তাকে পছন্দ করতে পারি নি। সে যদি কাউকে দিয়ে আমার আমার সর্বনাশ করে?

- কী বলছেন এসব? ডাক্তার নেহাল তো এমন ধরনের কোন লোক নয় আর তাছাড়া ডাক্তার নেহাল আমার একটা ভালো বন্ধু।আমাদের বিয়ের কথা শুনে  খুশি হয়েছিলো।

- হ্যাঁ আপনার বন্ধু হতে পারে কিন্তু আমার ভাবনার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে যে ডাক্তার নেহার হয়তো এমনটা করেছে।

- আচ্ছা আপনি আগামীকাল আমার সাথে দেখা করতে পারবেন? আমার একটা জরুরী কাজ ছিল আর তাছাড়া আমার আজকে রাতে ডিউটি রয়েছে আমার একটু তাড়াতাড়ি চলে যেতে হবে।

- ঠিক আছে! আপনার কাজ থাকলে আপনি যেতে পারেন।তবে আমি আপনার সাথে আগামীকাল দেখা করতে পারব কিনা তার জানিনা। আপনার সাথে হয়তো আমার আর একটিবার কথা হতে পারে তারপর আপনার সাথে আমার কোনো যোগাযোগ হবে না।

- দেখুন আমি যেহেতু আপনাকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আপনাকেই বিয়ে করবো।

- আমার এইসব জানা শোনার পরে যদি কেউ আমাকে বিয়ে করতে চায় তাহলে হয়তো সে আমাকে করুণা করে বিয়ে করবে। আমি এমবিবিএস পাশ করে ডাক্তার হয়েছি তাতে কি হয়েছে? আমার নামে যে একটা কলঙ্ক হয়ে গেছে এটাতো আমি মুছে ফেলতে পারবো না।আর  কাউকে বোঝাতে পারবোনা যে আমার আসলে কোনো দোষ নেই।

- আপনি চুপ করেন তো। এভাবে ভাবছেন কেন? আপনাকে আমার ভালো লাগে!কিন্তু আমি বলছি না যে আমি আপনাকে ভালোবেসে ফেলেছি। তবে আমি আমার নিজ থেকেই কিন্তু ফ্যামিলিতে বলেছিলাম আমি আপনাকে বিয়ে করবো। আর এখন যদি আমি আপনাকে বিয়ে বিয়ের কথা বলি এটা কি করুণার মধ্যে পড়বে?

- আমি এখন কিছু শুনতে চাচ্ছি না। তবে আমি আপনাকে এটাই জানিয়ে রাখলাম যে আমার এসবের পিছনে হয়তো ডাক্তার নেহালের হাত রয়েছে। আর এটাই জানাতে আমি আজকে আপনাকে আমার কাছে আসতে বলেছি। এখন আমি উঠি।

- আপনার যদি ডাক্তার নেহাল কে পুরোপুরিভাবে সন্দেহ হয় তাহলে আপনি থানায় ডায়েরি করে রাখতে পারেন।

- ডায়েরি করে আর কি হবে? ভালো কোনো সমাধান আমি পাবো?আমার নামে তো বাজে কথা রটিয়ে দিয়ে গেছে। তাতো আর কখনো মুছে ফেলতে পারবো না। আমি আপনাকে রিকোয়েস্ট করছি আপনি আর আমাকে  এই ব্যপারে কথা বলবেন না। এখন উঠি আপনি ভালো থাকুন।

- আচ্ছা শুনুন সবকিছু বাদ দিয়ে আপনি আবার জয়েন করুন। আমাদের মেডিকেলে ফিরে আসুন। ভালো একটা সমাধান আপনি পাবেন। এভাবে হতাশ হওয়ার কোন মানেই নেই। মানুষের জীবনে কোনো না কোনো ভাবে আসবেই বাঁধা আসবে। বাঁধা পেড়িয়ে এই জীবনটা চালিয়ে যেতে হবে। আর আমার একটাই রিকুয়েস্ট আপনি আপনার ফোন কখনো অফ করবেন না আপনি কোথায় থাকেন সেই এড্রেস টা আমাকে একটু জানাবেন। আমি আমার মাকে নিয়ে আপনাদের বাসায় আবার আসবো।

মিলির সাথে কথা বলে আমি সোজা আমার বাসায় চলে গেলাম। বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আমার ডিউটিতে চলে গেলাম। পরের দিন দুপুরবেলা আমি বাবা মা একসাথে খেতে বসেছি। খেতে খেতে বাবাকে বললাম....

- বাবা আপনিও জানেন আমিও জানি যে মিলির কোন দোষ নেই কেউ হয়তো মিলিকে ভাবে ফাঁসিয়ে দিয়েছে। সেজন্য কি আমাদের উচিত হবে আমাদের এই বিয়েটা ক্যানসেল করে দেওয়ার। আর তাছাড়া মিলি যথেষ্ট ভালো একটা মেয়ে  আমি মিলিকে চিনি একসাথে আমরা ডিউটি করেছি।

- আবিদ আমাদেরও তো একটা মান-সম্মান রয়েছে। তুই যদি মিলিকে বিয়ে করিস তাহলে লোকজনের মুখে বা তোর বন্ধুবান্ধবের কাছে তোর সারাটি জীবন পস্তাতে হবে। কেউ না কেউ তোকে খোটা দিবে তখন তোর অনেক কষ্ট লাগবে।আমিও তো বাহিরে চলাফেরা করি। আমিই বা কিভাবে লোকজনের সামনে মুখ দেখাবো। সুতরাং আমি একটা কথাই বলবো যে মিলির ব্যাপারে  সমস্ত চিন্তা ভাবনা তোর মাথা থেকে মুছে ফেল। আর তুই একজন ডাক্তার। বেশ ভালো একটা ফ্যামিলির মেয়ে আমরা তোর জন্য নিয়ে আসতে পারবো। মিলির চেয়ে সুন্দরী মেয়ে তোর জীবনে আসবে। প্লিজ এই মিলির ব্যাপারে আমার কাছে আর কিছুই বলিস না। আর আমি কখনোই মেনে নিতে পারব না। আর তুই আমার একটা মাত্র সন্তান আমরা চাই তোর ভালই হোক।

আমি বাবার কাছ থেকে হতাশ হয়ে ফিরে আসলাম। আমি তাদের সামনে আর কিছুই বলতে পারলাম না। ওই যে তারা আমাকে লালন-পালন করে বড় করিয়েছে। টাকা ব্যয় করে আমাকে ডাক্তারী পাশ করিয়েছে এখন আমি তাদের জন্য ডাক্তার। তাদের কথা অমান্য কখনো হতেই পারবোনা।

পরের দিন ভোরবেলা আমি জানতে পারি ডাক্তার নেহাল খুন হয়েছে। খুব বিশ্রীভাবে ডাক্তার নেহালকে খুন করা হয়েছে। আমার মাথায় ঘুরপাক খেতে লাগল ডাক্তার নেহাল কেন খুন হবে?
ডাক্তার নেহাল খুন হয়েছে তার নিজ বাসাতেই। গত রাতে তার মেডিকেলে ডিউটি ছিল। ডিউটি শেষ করে বাসায় ফিরছে একা। ডাক্তার নেহালের ড্রাইভার কয়েকদিন এর জন্য তার গ্রামের বাড়িতে চলে গেছে। সেজন্য ডাক্তার নেহাল নিজেই গাড়ি ড্রাইভ করে মেডিকেলে যেত আর বাসায় ফিরত। তার বাসায় আর কেউ ছিলনা। চার নাম্বার ফ্লোরে ডাক্তার নেহাল থাকতো।

সকালে ডাক্তার নেহালের একটা অপারেশন ছিল কিন্তু সকালে ডাক্তার নেহাল মেডিকেলে যায়নি। কয়েকবার ডাক্তার নেহালকে ফোন করা হয়েছিল মেডিকেল থেকে। কিন্তু ফোন পিক করেনি। একপর্যায়ে মেডিকেল থেকে ডাক্তার নেহালের বাসায় এক লোক যায়। গিয়ে দেখে দরজা ভেতর থেকে লক করা। কয়েকবার ডাকাডাকি করার পরেও ভেতর থেকে কোন সারা শব্দ পেলো না।

বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পরেও যখন ডাক্তার নেহাল দরজা খোলো না। তখন সে লোকটা থানায় ফোন করে পুলিশ আনে।

দরজা ভেঙে ডাক্তার নেহালের রুমে যাওয়ার পরে দেখে ডাক্তার নেহাল উলঙ্গ ভাবে ফ্লোরে পড়ে আছে। সমস্ত ফ্লোর রক্তাক্ত করা। ডাক্তার নেহালের ডান হাতের পাঁচটা আঙ্গুল একটা ট্রেতে রাখা। ডাক্তার নেহাল যে বাসায় থাকতো সেই বাসাটা সম্পূর্ণভাবে পুলিশরা ঘেরাও করে আছে। তদন্ত পুলিশ অফিসার ডাক্তার নেহালের রুম তদন্ত করতে লাগল কোন রকমের ডকুমেন্ট পেল না। ডাক্তার নেহালের ডান হাতের পাঁচটা আঙ্গুল পাশের একটা ট্রেতে রাখা। তার বুকে চালিয়েছে ছুরি।ছয় ছয়টা ছুরির আঘাত ডাক্তার নেহালের বুকে করা হয়েছে। পোস্টমর্টেম করানোর জন্য ডাক্তার নেহালকে পাঠিয়ে দেওয়া হল।

আমার কাছে এই ঘটনাটা একটা ঘোলাটের মতো লাগলো।গতকালই মিলি আমাকে বলল যে নেহাল নাকি মিলি কে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল। এবং ডাক্তার নেহালকে নাকি মিলির সম্পূর্ণরূপে সন্দেহ হচ্ছে। তাহলে এই খুনটা মিলি করলো না তো?

ডাক্তার নেহাল খুন হয়েছে এই বিষয়টা মিলিকে জানানোর জন্য মিলির নাম্বারে কয়েকবার ফোন দিলাম। কিন্তু ফোন দিয়ে দেখি মিলির নাম্বার অফ। কয়েকবারই চেষ্টা করেছি  কিন্তু ফোন দিতে ব্যর্থ হলাম।

এখন আমার নিজেরই সন্দেহ হচ্ছে যে মিলি ডাক্তার নেহাকে খুন করেছে হয়ত।

দিন পেরিয়ে গেল সাতদিন।  এর মাঝে মিলির সাথে কোন যোগাযোগ করতে পারলাম না। এবং ডাক্তার নেহালের খুনের রহস্য খুঁজে পেল না পুলিশ অফিসার।

দিন দশেক পরে আমার নাম্বারে একটা রেড অ্যালার্ট এর মেসেজ আসলো। আমি মেসেজটা ওপেন করতেই অবাক হয়ে গেলাম। মেসেজটা ছিল এমন...

- মিস্টার আবিদ ধরুন আমি আপনার একজন শুভাকাঙ্ক্ষী। আমি কে তার পরিচয় আপনাকে আমি দিব না। তবে একটা কথা শুনে রাখুন ডাক্তার নেহালের খুনের পরের টার্গেট কিন্তু আপনি। সুতরাং আমি একটা কথাই বলবো আপনি নিজেকে একটু সেফ রাখবেন। আর হ্যাঁ আরেকটা কথা। আপনি যে মেডিকেলে জব করেন আপনার শত্রু সেই মেডিকেলে রয়েছে এবং আপনাদের মধ্যেই হয়তো কেউ আপনাকে খুন করার চেষ্টা করবে যেমনটা ডাক্তার নেহাল কে করা হয়েছিল। এই বিষয়টা আপনাকে জানানোর দরকার ছিল সেজন্য আপনাকে জানালাম। তবে একটা কথা। আমাকে খুঁজে বের করার জন্য আপনি মোটেও চেষ্টা করবেন না। যদি আমাকে খুঁজে বের করতে চান তাহলে হয়তো আপনি আপনার নিজের জীবনটা রক্ষা করতে পারবেন না। তবে আপনি আপনার ফোন সবসময় সাথে রাখবেন আমি আপনাকে মেসেজ দিয়ে জানাবো। আপনি ভালো থাকবেন। "

মেসেজটা পড়ার পরে আমি সেই নাম্বারে বেশ কয়েকবার ফোন দিলাম কিন্তু সেই নাম্বারে ফোন আর ঢুকাতে পারলাম না। এখন আমি কি করবো বুঝতে পারতেছি না। এই মেসেজের ব্যাপারে আমি কি আমার বাবা-মাকে জানাবো? আর আমি যদি তাদের জানাই
 তাহলে তো আরো বেশি চিন্তা করবে আমাকে নিয়ে।

 আমার যে বন্ধুটি পুলিশ অফিসার আমি ওকে ফোন দিলাম...

-নিলয় তোর সাথে আমার জরুরি কথা আছে তুই কি আমার সাথে দেখা করতে পারবি?

- বন্ধু আমিতো ডিউটিতে রয়েছি এই মুহূর্তে আমি কিভাবে তোর সাথে দেখা করবো।

-প্লিজ  যদি পারিস আমার কাছে আয়। আমি মনে হয় খুব বিপদে পড়ে যাচ্ছি।

-আচ্ছা কি হয়েছে আমাকে বল।

-না আমি ফোনে বলতে পারবো না, সামনাসামনি বলতে হবে।আর তাছাড়া আমার খুব ভয় লাগতেছে।

-আচ্ছা আমার ডিউটি শেষ করতে আরো ঘন্টা তিনেকের মত আছে তারপরে আমি তোর সাথে দেখা করতে পারবো।

- ঠিক আছে।ডিউটি শেষ করে আমার বাসায় আয় তারপর আমি তোকে সব খুলে বলবো।

নিলয়ের সাথে কথা বলা শেষ করে চুপচাপ বসে আছি। কি করব বুঝতে পারতেছিনা। আমার বাবা-মা বারবার আমার কাছে এসে জিজ্ঞেস করতেছে। আমার কি হয়েছে? আমি তাদের জবাব দিতে পারতেছিনা।

আমি যদি আজকের এই ম্যাসেজটার ব্যাপারে বাবা-মাকে কিছু বলি তারা অনেক চিন্তিত হয়ে যাবেন।

রাত দশটার দিকে নিলয় আমার বাসায় আসলো। আমরা দুজনে ড্রয়িং রুমে বসে আছি নিলয় আমাকে জিজ্ঞেস করলো..

- কি হয়েছে এখন বল?

- আচ্ছা ছাদে চল তারপরে বলি।

- হুম চল।

আমরা দুজনে ছাদের এক কোনায় বসে আছি। নিলয় পকেট থেকে সিগারেট বের করে জ্বালালো আর আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল.... 

- এই নে তুই! এটা টান। তোকে দেখে তো মনে হচ্ছে তুই বেশ চিন্তিত।

- তোমার নাম্বার একটা মেসেজ আসছে। আমাকে কেউ নাকি খুন করার জন্য ওত পেতে আছে।এখন আমি কি করবো বুঝতে পারতেছি না। এই দেখ আমার নাম্বারে একটা মেসেজ এসেছে এটা পড় তাহলে তুই বুঝতে পারবি।

- কি বলিস এসব?তোকে কেন খুন করতে যাবে মানুষ?

- তুই তো জানিস আমাদের মেডিকেলের ডাক্তার নেহাল খুন হয়েছে। অথচ দেখ ডাক্তার নেহাল অনেক ভালো একজন ডাক্তার এবং ভালো একজন মানুষ কে বা কারা তাকে খুন করেছে। আজ পর্যন্ত তোরা বের করতে পারলি না ডাক্তারের খুনের রহস্য।তার মতো আমাকেও নাকি খুন করার জন্য বসে আছে

-তুই এক কাজ কর।থানায় ডায়েরি কর খুব তাড়াতাড়ি। না হলে তুই বিপদে পড়ে যাবি।আর আংকেল আন্টিকে এই  ব্যাপারটা  কিছু জানাস না।তাহলে তারা অনেক টেনশনে পরে যাবে।

-কিন্তু আমাকে তো ওই লোকটা বললো তাকে যেনো খুজে বের করার চেষ্টা না করি।তাহলে নাকি আমি কোনো আপডেট জানতে পারবো না।

-তুই  গোপনে একটা ডাইরি করে রাখবি। যে বিষয়টা তুই আমি ছাড়া আর কেউই জানবেনা। আর যে নাম্বারটা থেকে তোর কাছে মেসেজ এসেছে সেই নাম্বারটা আমার কাছে দে আমি নাম্বার ট্র্যাক করে তাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করবো।

- আর একটা বিষয় আমি তোকে জানাতে চাই ডাক্তার নেহাল খুন হওয়ার একদিন আগে মিলির সাথে আমার দেখা হয়। মিলিকে নাকি ডাক্তার নেহাল বিয়ের প্রস্তাব পাঠিয়ে ছিল। এবং মিলির নামে যে বাজে ভিডিও বাজে ছবি ভাইরাল হয়েছে তার জন্য নাকি সম্পূর্ণ ডাক্তার নেহাল দায়ী।

- ডাক্তার নেহাল খুন হওয়ার পিছনে হয়তো অন্য একটা রহস্য রয়েছে। আমি মনে করছি না যে মিলি ডাক্তার নেহাল কে খুন হয়েছে। কারণ পুলিশ অফিসার তদন্ত করার পর জানতে পেরেছে ডাক্তার নেহালের নাকি নারীদের প্রতি অনেক নেশা ছিল। এবং যে বাড়িতে থাকতো সেই বাড়ির মালিক পুলিশ অফিসারদের জানিয়েছে প্রায় রাতেই নাকি ডাক্তার নেহাল মেয়েদের নিয়ে ওর ফ্ল্যাটে উঠতো। আমার মনে হয় যে কোনো মেয়ে এই শত্রুতা শেষ করার জন্য ডাক্তার নেহালকে খুন করে দিয়েছে। এবং এই খুনের রহস্য খুঁজে বের করার জন্য তদন্ত অফিসারেরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং আশা করি খুব তাড়াতাড়ি খুনি ধরা পড়ে যাবে।

-কিন্তু তুই তো জানিস আমার এমন কোনো বাজে নেশা ছিলো না।তাহলে আমাকে খুন?

- ঘাবড়ে যাস না কিছু একটা হবে তো। আচ্ছা আজ উঠি অনেক রাত হয়েছে। তোর ভাবি বাসায় ওয়েট করতেছে। আর আমি কালকে যখন থানায় যাব তখন পুলিশ অফিসারদের সাথে আমি এই ব্যপারে আলাপ আলোচনা করবো।

নিলয় আমার বাসা থেকে চলে যাওয়ার পরে রাত আনুমানিক দুইটার দিকে মিলির নাম্বার থেকে আমার ফোনে ফোন আসে। ফোন দিয়ে মিলি বলে...

-আবিদ সাহেব!আমি দেশের বাহিরে চলে যাচ্ছি।হয়তো আপনার সাথে আমার আর কখনো যোগাযোগ হবে না।

- ডাক্তার নেহাল খুন হয়েছে সেই ব্যাপারে আপনি কিছু জানেন?

- হ্যাঁ আমি সব জানি। এটাও জানি যে আপনি হয়তো সন্দেহ করতেছেন ডাক্তার নেহাল কে আমি খুন করেছি। কিন্তু ডাক্তার নেহাল যেদিন খুন হয়েছে সেদিন আমি এই শহরের বাহিরে ছিলাম।

- আমাকে খুন করার টার্গেট নিয়েছে এটা কি আপনি জানেন?

- হ্যাঁ আমি এটাও জানি। আপনার ব্যাপারে আমার নাম্বারে একটা মেসেজ এসেছে আমি আপনার নাম্বারে পাঠিয়ে দিচ্ছি দেখে নিবেন। আপনার সাথে আমি আর কিছু বলতে চাচ্ছি না। আপনি ভালো থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।

 কথা এড়িয়ে মিলি ফোনটি কেটে দিলো......

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.