ভালোবাসার চেয়ে ভালো থাকা জরুরি।
বেশ তো ছিল দিনগুলো তুমি-আমি আর আম্মু-আব্বু।
বেশ তো হ্যাপি ছিলাম আমি,
আর আজ?
আম্মু তার নিজের ঠিকানায়,
আব্বুও তার নিজের ঠিকানায়।
আর তুমি?
তুমিও নতুন ঠিকানায় ঠিকিই সুখে আছো,
আমি?
আমার ঠিকানা? কোথায় গেলো আমার ঠিকানা? তোমায় বাবা-মা দিতে গিয়ে, তোমায় একটা পরিবার দিতে গিয়ে আজ আমি?
আমার কোনো ঠিকানা নেই,
নেই কোনো প্রিয়জন, যা ছিল
সব তুমি সাথে করে নিয়ে গেছো।
তুমি যে মানুষটা কে স্মোক করতে না বলেছিলে, যে মানুষটা স্মোক করলেই তোমার কষ্ট হতো, আজ সেই মানুষটা ঠিকিই স্মোক করে, আর আগে যা ছিল?
সব মানুষ তাদের নিজেদের নিয়ে ব্যাস্ত।
এ ক্যামন জীবন দিলে আমায়?
যেখানে নেই কোন প্রিয়জন, নেই আমায় বোঝার মত মানুষ।
শুধুই পড়ে আছে পুরোনো ডায়েরি।
তুমি বলতে আমি স্মোক করলে, বা আমার একটু
ব্যাথা লাগলে তোমার অনেক কষ্ট হত, বলতে সবই
কি মিথ্যে ছিল?
স্মোক তো দুরের কথা একটা মানুষ কতটা খারাপ
হলে পরিবার থেকে রিহ্যাবে রাখে, সেটা কি জানো?
না, সেটাতো তোমার জানার কথা নয়, জানলে বা বুঝার চেষ্টা করলে হয়ত মানুষটাকে পারতে ভালো রাখতে।
কি বলবে এখন আমি খারাপ? হ্যাঁ ঠিকিই আমি খারাপ খারাপ না হলে কেউ নিজের বুকে ধারালো ছুড়ি বসাতে পারে?
না, কখনোই না।
রিহ্যাব কি বুঝো? কেউ শুনলে হয়ত বলবে নেশাখোর, উন্মাদ তাই রিহ্যাবে রাখা হয়েছিল।
কিন্তু একটা মানুষ এমনেই এমন হয়?
যেদিন ক্ষত বুক নিয়ে ডাক্তারের কাছে যাওয়া হয়েছিল, সেদিন ডাক্তার বলেছিল নেশা করেই এইভাবে বুকটা চিড়ে ফেলেছে!
প্রথমে আমার বন্ধুরা যখন ডাক্তারের এসব কথা শুনে মারতে চেয়েছিল, হ্যাঁ আমিই না করেছিলাম থাক। আগে শিলি করা হোক তারপর।
ডাক্তার ইচ্ছে করেই অবস করেছিল না আমার দেহ অবস না করেই শিলি করেছিল কিন্তু ক্যান? আমি নেশা করে বুক কেটেছি। যখন শিলি দিচ্ছিল পিন এপাশ থেকে ঢুকিয়ে ওপাশে দিচ্ছিল বুঝেছিলাম দেহের ব্যাথা, মনের ব্যাথা তো আছেই। কষ্টে আমার চিৎকার কেউ সহ্য না করতে পেরে, আমার বন্ধু তোমায় মেসেজ ও কল করেছিল আমি হাসপাতালে তোমার কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
শিলি শেষে যখন উঠে বসলাম আমার একটাই অনুরোধ ছিল আমার মেডিক্যাল রিপোর্ট করা হোক, আমার দেহে কোনো এলকোহল ছিল কিনা, সেই টেস্টে যখন কোনো নেশার কিছুই ছিলনা, সেদিন শুধু ঐ ডাক্তার আংকেল কে একটা কথা বলেছিলাম, শুধু নেশা করেই কেউ দেহ চিড়ে ফেলেনা, এমন কিছু কষ্ট থাকে যখন সে সুস্থ মস্তিকে নিজেকে মেরে ফেলতে পারে।
তুমি চলে যাবার পড় সবার কথা আমাকেই শুনতে হয়েছিল বউ এমনি এমনি যায়নি, নেশা করে ছেলে ভালোনা, আর কারো কতো কথা। এগুলা আড়াল থেকে আমাকেই শুনতে হয়েছিল, এখনো হয়।
আচ্ছা ভালোবেসেই তো বিয়ে করেছিলাম তাহলে একসাথে থাকতে। এভাবে কি কেউ চলে যায়?
এগুলা কথা বুকে এমনভাবে লাগতো সেটা কেউ বুঝবে না৷
আরো হাজার কথা বলে যখন পরিবার আর সমাজ চোখে আঙুল দিয়েছিল, সেটা শুধুই কথা না, এটাও একটা মানসিক অত্যাচার।
এগুলা সহ্য করে কে ভালো থাকতে পারে? খারাপ হয়ে গেলাম রিহ্যাবে রাখাও হলো ।
চলে আসার পর? কে ছিল আমার পাশে?
বাবা তার নিজ ঠিকানায়,
মা মমতাময়ী সেও তার নিজ ঠিকানায় আর তুমি?
তুমি তো নতুন কারো বুকের ঠিকানায়।
তুমি একটা বাবা-মা চেয়েছিলে দিয়েছিলাম, একটা পরিবার চেয়েছিলে দিয়েছিলাম।
তাহলে ক্যান আমার কাছে থেকে তোমাকেই কেড়ে নিলে, কেড়ে নিলে আমার পরিবার,
আজ কোনো পরিবার নেই আমার কিন্তু তোমার? পরিবার আছে, আছে প্রিয় মানুষ, আছে বাবা-মা, তাহলে কেন আমার সব কেড়ে নিলে?
এ ক্যামন জীবন দিয়ে গেলে?
কোথায় খাই, কোথায় ঘুমাই?
রাতে বাবা-মা এর কথা মনে পড়লেও আর তাদের পাইনা?
তাহলে কি আমি জারজ হয়ে গেলাম? না, সেটা তো না, আজ আমার বাবা-মা থেকেও নেই, তুমিও নেই কেউ নেই আমার।
রাতে ঐ আকাশের দিকে তাকিয়ে আল্লাহ কে বলি
ক্যান পাঠিয়েছিলে এই দুনিয়ায়?
সব কেড়েই নিবেন তাহলে না হয় এতিম বানিয়েই পাঠাতেন, এভাবে সব থাকতেও ক্যান এতিম করে রাখলেন আমায়?
তোমায় বলছি এতিমের কষ্ট আমাদের নবী ও সহ্য করতে পারে না, কারন তিনিও এতিম ছিলেম ।
চাইনা তোমার কোনো ক্ষতি হোক, কারন আমার তো কারোও বিরুদ্ধেই অভিযোগ নেই, আছে তার ওপরে যিনি এই ভাগ্যের লিখন টা লিখেছিলেন।
কোন মন্তব্য নেই
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন